মুহাম্মদ হামিদুল ইসলাম আজাদ
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।
প্রাণ প্রিয় ভাই, রামাযানুল মোবারকের প্রস্তুতির মাস শাবান আমাদের মাঝে উপস্থিত । এ মাসে আমাদের জন্য রয়েছে কিছু করণীয় । রয়েছে কিছু বর্জনীয় । এ বিষয়টি নিয়েই আমাদের এই লেখার অবতারণা ।
শবেবরাতের পরিচয় : আরবী শা‘বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে সাধারণভাবে ‘শবেবরাত’ বা ‘লায়লাতুল বারাআত’ (ليلة البراءة) বলা হয় । ‘শবেবরাত’ শব্দটি ফারসী । এর অর্থ হিস্সা বা নির্দেশ পাওয়ার রাত্রি । দ্বিতীয় শব্দটি আরবী । যার অর্থ বিচ্ছেদ বা মুক্তির রাত্রি । এদেশে শবেবরাত ‘সৌভাগ্য রজনী’ হিসাবেই পালিত হয় । এজন্য সরকারী ছুটি ঘোষিত হয় । লোকেরা ধারণা করে যে, এ রাতে বান্দাহর গুনাহ মাফ হয় । আয়ু ও রূযী বৃদ্ধি করা হয় । সারা বছরের হায়াত-মউতের ও ভাগ্যের রেজিষ্ট্রার লিখিত হয় । এই রাতে রূহগুলো সব আত্মীয়-স্বজনের সাথে মুলাক্বাতের জন্য পৃথিবীতে নেমে আসে । বিশেষ করে বিধবারা মনে করেন যে, তাদের স্বামীদের রূহ ঐ রাতে ঘরে ফেরে ।
এজন্য ঘরের মধ্যে আলো জ্বেলে বিধবাগণ সারা রাত মৃত স্বামীর রূহের আগমনের আশায় বুক বেঁধে বসে থাকেন । বাসগৃহ ধুপ-ধুনা, আগরবাতি, মোমবাতি ইত্যাদি দিয়ে আলোকিত করা হয় । অগণিত বাল্ব জ্বালিয়ে আলোকসজ্জা করা হয় । এজন্য সরকারী পুরস্কারও ঘোষণা করা হয় । আত্মীয়রা সব দলে দলে গোরস্থানে ছুটে যায় । হালুয়া-রুটির হিড়িক পড়ে যায় । ছেলেরা পটকা ফাটিয়ে আতশবাজি করে হৈ-হুল্লোড়ে রাত কাটিয়ে দেয় । যারা কখনো ছালাতে অভ্যস্ত নয়, তারাও ঐ রাতে মসজিদে গিয়ে ‘ছালাতে আল্ফিয়াহ’ الصلاة الألفية বা ১০০ রাক‘আত ছালাত আদায়ে রত হয়, যেখানে প্রতি রাক‘আতে ১০ বার করে সূরায়ে ইখলাছ পড়া হয় । সংক্ষেপে এই হ’ল এদেশে শবেবরাতের নামে প্রচলিত ইসলামী পর্বের বাস্তব চিত্র ।