মুহাম্মদ হামিদুল ইসলাম আজাদ
আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন, আমাদের ঈমান কখন বাড়ে আবার কখন কমে । এ সম্পর্কে রাসূল (সা) বলেন, “আমাদের প্রত্যেকের ঈমান ক্রমশ জীর্ণ হতে থাকে যেভাবে “সাউব” (এক ধরনের পোশাক) জীর্ণ হয়ে যায় (পোশাক ক্রমশ পরিধান করতে থাকলে যেমন একটা সময় জীর্ণ -শীর্ণ হয়ে যায়, আমাদের ঈমানও ঠিক তেমনি করে জীর্ণ হয়ে যায়) ।” আর তাই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর উপদেশ হল, (যেহেতু আমাদের ঈমান জীর্ণ হয়ে যায়) “অতএব, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত হৃদয়ে ঈমানের নবায়নের জন্য আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের কাছে দোয়া করা” ।
[হাদীসটি আল - হাকিম তার “আল-মুসতাদ্রাক” গ্রন্থে, আল - হায়সামি তার “মাজ‘মা আল - যা‘ঈদ” গ্রন্থে, আল - তাবারানি তার “আল-কাবীর” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন ।]
আত্ম - সচেতনতার জন্য দুর্বল ঈমানের লক্ষণগুলো ভালোভাবে জেনে রাখা আবশ্যক ; দুর্বল ঈমানের কিছু লক্ষণ হল :
১ . কোরআন তেলাওয়াতের বা দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের ব্যাপারে অনীহা এবং অনাগ্রহ বোধ করা ।
২ . কুরআনের তেলাওয়াত শুনে বিশেষ করে পাপের জন্য শাস্তি কিংবা সৎকাজের জন্য পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে এমন আয়াতগুলো শুনেও হৃদয়ে কোন রকমের কোন প্রভাব বা অনুভূতির তৈরি না হওয়া ।
৩ . ত্যাগের মানুষিকতা ছেড়ে ভোগের মানুষিকতা তৈরি হওয়া ।
৪ . ভাল কাজে আলসেমি বোধ হওয়া বা ঢিলেমি করা । যেমন: নির্ধারিত সময়ে সলাত আদায় না করা ।
৫ . নিজে না করে অন্যকে ভাল কাজের আদেশ দেওয়া ।
৬ . রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর সুন্নাহ্ অনুশীলনের ব্যাপারে অবহেলা ।
৭ . আমানতের খেয়ানত করা ।
৮ . মান উন্নায়ন মুলোক জীবন জাপন না করা ।
৯ . কোন দলীল - প্রমাণ ছাড়াই কেবল তর্ক করতে ভাল লাগে তা - ই তর্ক করা ।
১০. সবসময় নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকা । নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই শুধু বেঁচে থাকা । চরম আত্ম - কেন্দ্রিক জীবন যাপন করা ।
১১. ধন - সম্পদ, প্রভাব - প্রতিপত্তি, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি এসব কিছুর পিছনেই সারাক্ষণ ছুটে চলা ।
১২ . খামখেয়ালী মেজাজ । যেমন: সামান্য বিষয়েই তুলকালাম করে ফেলা বা মেজাজ সবসময় তিরিক্ষে বা খিটমিটে হয়ে থাকা ।
১৩ . আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের স্মরণ থেকে বিমুখ হওয়া এবং তাঁকে স্মরণ করা কঠিন মনে হওয়া ।
১৪ . পাপ করা সত্ত্বেও মনে পাপবোধ সৃষ্টি না হওয়া ।
১৫ . শারীয়াহ্ বিরুদ্ধ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার পরও মনে কোন অনুশোচনা বা অনুতাপ বোধ না হওয়া ।
১৬ . ক্রমাগত মানসিক দৈন্যতার পাশাপাশি আর্থিক কৃপণতা বাড়তে থাকা । ধনসম্পদ আঁকড়ে ধরে রাখার প্রবণতা ।
১৭. অন্যের অবনতি, ক্ষয় -ক্ষতি দেখে মানসিক তৃপ্তি বোধ হওয়া ।
১৮ . শুধু হারাম ও হালালকেই মুখ্য মনে করা অথচ যেসব বিষয় মাকরুহ্ (অপছন্দনীয়) সেগুলোর দিকে ভ্রূক্ষেপ না করা ।
১৯ . কেউ কোন ভাল (ছোট) কাজ করলে তা নিয়ে হাসাহাসি করা । যেমন : কেউ হয়ত মসজিদ ঝাড়ু দিল যা অবশ্যই ভাল কাজ কিন্তু কাজটি ছোট বলে তাকে নিয়ে হাসি তামাশা করা ।
২০ . নিজে মুসলিম হয়ে অন্য মুসলিমদের কল্যাণসাধনের ব্যাপারে কোনরূপ প্রচেষ্টা বা মাথাব্যথা না থাকা
২১ . ইসলামের তথা মুসলিমদের কল্যাণ এবং উন্নতি হয় এমন বিষয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়া ।
২২ . বিপদে ধৈর্য ধারণ করতে না পারা । যেমন : কেউ মারা গেলে উচ্চস্বরে বিলাপ করে, বুক চাপড়িয়ে কান্নাকাটি করা ।
২৩ . দুনিয়ার মোহে অন্ধ হয়ে যাওয়া । দুনিয়ার মোহে অন্ধ হওয়ার একটি লক্ষণ হল পার্থিব কোন কিছুর ক্ষতি হলেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ।
২৪ . নিয়মিত দাওয়াতী কাজে সময় না দেয়া । ২৫ .ইসলামী আন্দোলনে সক্রিয় না থাকা ।
আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তিনি আমাদেরকে তাঁর পছন্দনীয় কথা, কাজ ও আমল করার তাওফিক দান করুন । আমীন ।
আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন, আমাদের ঈমান কখন বাড়ে আবার কখন কমে । এ সম্পর্কে রাসূল (সা) বলেন, “আমাদের প্রত্যেকের ঈমান ক্রমশ জীর্ণ হতে থাকে যেভাবে “সাউব” (এক ধরনের পোশাক) জীর্ণ হয়ে যায় (পোশাক ক্রমশ পরিধান করতে থাকলে যেমন একটা সময় জীর্ণ -শীর্ণ হয়ে যায়, আমাদের ঈমানও ঠিক তেমনি করে জীর্ণ হয়ে যায়) ।” আর তাই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর উপদেশ হল, (যেহেতু আমাদের ঈমান জীর্ণ হয়ে যায়) “অতএব, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত হৃদয়ে ঈমানের নবায়নের জন্য আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের কাছে দোয়া করা” ।
[হাদীসটি আল - হাকিম তার “আল-মুসতাদ্রাক” গ্রন্থে, আল - হায়সামি তার “মাজ‘মা আল - যা‘ঈদ” গ্রন্থে, আল - তাবারানি তার “আল-কাবীর” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন ।]
আত্ম - সচেতনতার জন্য দুর্বল ঈমানের লক্ষণগুলো ভালোভাবে জেনে রাখা আবশ্যক ; দুর্বল ঈমানের কিছু লক্ষণ হল :
১ . কোরআন তেলাওয়াতের বা দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের ব্যাপারে অনীহা এবং অনাগ্রহ বোধ করা ।
২ . কুরআনের তেলাওয়াত শুনে বিশেষ করে পাপের জন্য শাস্তি কিংবা সৎকাজের জন্য পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে এমন আয়াতগুলো শুনেও হৃদয়ে কোন রকমের কোন প্রভাব বা অনুভূতির তৈরি না হওয়া ।
৩ . ত্যাগের মানুষিকতা ছেড়ে ভোগের মানুষিকতা তৈরি হওয়া ।
৪ . ভাল কাজে আলসেমি বোধ হওয়া বা ঢিলেমি করা । যেমন: নির্ধারিত সময়ে সলাত আদায় না করা ।
৫ . নিজে না করে অন্যকে ভাল কাজের আদেশ দেওয়া ।
৬ . রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর সুন্নাহ্ অনুশীলনের ব্যাপারে অবহেলা ।
৭ . আমানতের খেয়ানত করা ।
৮ . মান উন্নায়ন মুলোক জীবন জাপন না করা ।
৯ . কোন দলীল - প্রমাণ ছাড়াই কেবল তর্ক করতে ভাল লাগে তা - ই তর্ক করা ।
১০. সবসময় নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকা । নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই শুধু বেঁচে থাকা । চরম আত্ম - কেন্দ্রিক জীবন যাপন করা ।
১১. ধন - সম্পদ, প্রভাব - প্রতিপত্তি, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি এসব কিছুর পিছনেই সারাক্ষণ ছুটে চলা ।
১২ . খামখেয়ালী মেজাজ । যেমন: সামান্য বিষয়েই তুলকালাম করে ফেলা বা মেজাজ সবসময় তিরিক্ষে বা খিটমিটে হয়ে থাকা ।
১৩ . আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের স্মরণ থেকে বিমুখ হওয়া এবং তাঁকে স্মরণ করা কঠিন মনে হওয়া ।
১৪ . পাপ করা সত্ত্বেও মনে পাপবোধ সৃষ্টি না হওয়া ।
১৫ . শারীয়াহ্ বিরুদ্ধ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার পরও মনে কোন অনুশোচনা বা অনুতাপ বোধ না হওয়া ।
১৬ . ক্রমাগত মানসিক দৈন্যতার পাশাপাশি আর্থিক কৃপণতা বাড়তে থাকা । ধনসম্পদ আঁকড়ে ধরে রাখার প্রবণতা ।
১৭. অন্যের অবনতি, ক্ষয় -ক্ষতি দেখে মানসিক তৃপ্তি বোধ হওয়া ।
১৮ . শুধু হারাম ও হালালকেই মুখ্য মনে করা অথচ যেসব বিষয় মাকরুহ্ (অপছন্দনীয়) সেগুলোর দিকে ভ্রূক্ষেপ না করা ।
১৯ . কেউ কোন ভাল (ছোট) কাজ করলে তা নিয়ে হাসাহাসি করা । যেমন : কেউ হয়ত মসজিদ ঝাড়ু দিল যা অবশ্যই ভাল কাজ কিন্তু কাজটি ছোট বলে তাকে নিয়ে হাসি তামাশা করা ।
২০ . নিজে মুসলিম হয়ে অন্য মুসলিমদের কল্যাণসাধনের ব্যাপারে কোনরূপ প্রচেষ্টা বা মাথাব্যথা না থাকা
২১ . ইসলামের তথা মুসলিমদের কল্যাণ এবং উন্নতি হয় এমন বিষয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়া ।
২২ . বিপদে ধৈর্য ধারণ করতে না পারা । যেমন : কেউ মারা গেলে উচ্চস্বরে বিলাপ করে, বুক চাপড়িয়ে কান্নাকাটি করা ।
২৩ . দুনিয়ার মোহে অন্ধ হয়ে যাওয়া । দুনিয়ার মোহে অন্ধ হওয়ার একটি লক্ষণ হল পার্থিব কোন কিছুর ক্ষতি হলেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ।
২৪ . নিয়মিত দাওয়াতী কাজে সময় না দেয়া । ২৫ .ইসলামী আন্দোলনে সক্রিয় না থাকা ।
আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তিনি আমাদেরকে তাঁর পছন্দনীয় কথা, কাজ ও আমল করার তাওফিক দান করুন । আমীন ।
No comments:
Post a Comment