Wednesday, October 29, 2014

রহস্যময় জ্বিন এবং ভাগ্য গননা

রহস্যময় জ্বিন এবং ভাগ্য গননা

# জ্বিনদের সাথে গণকদের একবার যোগাযোগ ও চুক্তি সম্পন্ন হলে ভবিষ্যতে ঘটবে এমন কিছু ঘটনা সম্পর্কে জ্বিন তার অনুসারী গণকদের জানাতে পারে।
 # রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “তিন শ্রেণীর জ্বিন রয়েছে। এক প্রকার জ্বিন সারাক্ষণ আকাশে উড়ে বেড়ায়, দ্বিতীয় প্রকার জ্বিনেরা সাপ ও কুকুর হিসাবে বিদ্যমান, তৃতীয় প্রকার জ্বিন পৃথিবী অভিমুখে অগ্রসরমান তথা পৃথিবীতে অবস্থান করে এবং এরা এক জায়গায় বসবাস করা সত্ত্বেও এখানে সেখানে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাফেরা করে।
 # অবিশ্বাসী জ্বিনদেরকে বিভিন্ন নামে আরবীতে ও বাংলাতে উল্লেখ করা হয়ঃ ইফরীত, শয়তান, ক্বারীন, দৈত্য, পিশাচ, অপদেবতা, ভূত, পেত্নী, প্রেতাত্মা ইত্যাদি।
 # রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আমার সালাত ভাঙ্গার জন্য গতরাতে জ্বিনদের মধ্য হতে এক ইফরীত* থু থু নিক্ষেপ করেছিল।
 # ১৯৮০ সালে প্রচারিত ও প্রকাশিত বিভিন্ন প্রকার ভবিষ্যদ্বাণীর উপর পরিচালিত এক গবেষণা জরিপে দেখা যায়, সবচেয়ে নির্ভুল ভবিষ্যদ্বাণীর মাত্র ২৪% সঠিক হয়েছিল !
 # যদি কেউ কোন গণক, গায়বী বিষয়ের সংবাদদাতা বা ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট গমন করে তাকে কিছু জিজ্ঞেস করে তবে ৪০ দিবস পর্যন্ত তার কোন সালাত কবুল হবে না’।

মূলঃ ড. আবূ আমীনাহ বিলাল ফিলিপস্
ভাষান্তরঃ ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ হাসান
———————————-
( নোট: ড. আবূ আমীনাহ বিলাল ফিলিপস্ একজন বিশ্বখ্যাত দা’য়ী এবং ধর্মান্তরিত মুসলিম)
সৌজন্যে: মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী

মানুষের মধ্যে যেসব লোক অদৃশ্য ও ভবিষ্যত সম্বন্ধে জ্ঞানের অধিকারী বলে দাবী করে তারা বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন- গণক, ভবিষ্যদ্বক্তা, যাদুকর, ভবিষ্যৎদ্রষ্টা, জ্যোতিষী, হস্তরেখা বিশারদ প্রভৃতি। এসব ভবিষ্যদ্বক্তা নানা পদ্ধতি ও মাধ্যম ব্যবহার করে তথ্যাবলী উপস্থাপন করার দাবী করে থাকে। পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে- চায়ের পাতা পড়া, নানা প্রকার রেখা ও নকশা আঁকা, সংখ্যা লেখা, হাতের তালুর রেখা পড়া, রাশিচক্র খুঁটিয়ে দেখা, স্ফটিক বলের প্রতি স্থির দৃষ্টিপাত করা, হাড় দিয়ে খটর খটর বা ঝনঝন করানো, লাঠি ছোঁড়া ইত্যাদি। আলোচ্য প্রবন্ধে ভাগ্য গণনার নানাবিধ কলা-কৌশল ও এর শারঈ ভিত্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ্।

অদৃশ্য প্রকাশে ও ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হওয়ার দাবীদার জ্যোতিষীদেরকে প্রধানত দু’ভাগে বিভক্ত করা যায়।

Sunday, October 26, 2014

কুরআন গবেষণার প্রতি আল্লাহর নির্দেশ

কুরআন গবেষণার প্রতি আল্লাহর নির্দেশ :

কুরআন আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির নিকট প্রেরণ করেছেন, যেন মানব জাতি তা পাঠ করে, গবেষণা করে, তা থেকে দিক নির্দেশনা গ্রহণ করে ও জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে কুরআনের বিধান অনুযায়ী আমল করে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বর্তমানে অগণিত মানুষ তা দেখে দেখে পড়ারও যোগ্যতা রাখে না। এভাবে চলতে থাকলে মুসলিম জাতির উন্নতি সদূর পরাহত। তাই আসুন, জেনে নি কুরআন গবেষণার ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কী বলেন :

ক) আল্লাহ বলেন :

أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ أَمْ عَلَى قُلُوبٍ أَقْفَالُهَا


“তারা কি কুরআন নিয়ে গবেষণা করে না ? নাকি তাদের অন্তরে তালা মেরে দেয়া হয়েছে?” (সূরা মুহাম্মাদ- ২৪)

ইসলাম / ঈমান বিনষ্টকারী বিষয় সমুহ

ইসলাম / ঈমান বিনষ্টকারী বিষয় সমুহ

ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয় দশটি :

১। আল্লাহর ইবাদতে কোন কিছুকে শরীক করা :

আল্লাহ তাআলা বলেন :

إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ


“নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না, তা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন।” সূরা আন-নিসা : ৪৮
মৃত ব্যক্তির নিকট প্রার্থনা, ফরিয়াদ এবং মৃত ব্যক্তির নামে মানত ও জবেহ করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

মানুষকে ‘মাওলানা’ বলা যাবে কি না তার সমাধান

মানুষকে ‘মাওলানা’ বলা যাবে কি না তার সমাধান :

‘মাওলা’ শব্দের অর্থ হচ্ছেঃ প্রভু, মনিব, বন্ধু, সাহায্যকারী, অভিভাবক, মিত্র, আযাদকৃত দাস ইত্যাদি। ইমাম নভুভী বলেন, এই শব্দের ১৬টি অর্থ আছে। এই কারণে শব্দটি সালাফে সালেহীনের মধ্যে ব্যবহারের প্রচলন ছিল। যেমন দাসগণ তাদের মনিবদের উদ্দেশ্যে ‘মাওলা’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। রাসূলুল্লাহ সা. এক হাদীছে দাসকে নিষেধ করেছেন মনিবকে ‘মাওলায়া’ বা আমার প্রভূ বলতে। আবার আরেক রেয়াওয়াতে অনুমতি দিয়েছেন যে দাস তার মনিবকে বলবে ‘সাইয়্যেদী ও মাওলায়া’। (উভয় বর্ণনা সহীহ মুসলিমে আছে)
এখানে ‘মাওলা’ শব্দের শেষে ‘ইয়া’ সর্বনাম যোগ করলে একবচন বক্তা বুঝায়, আর ‘না’ সর্বনাম যোগ করলে বহুবচন বক্তা বুঝায়।

কুফরী কি ? কোন কাজ মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয় ? কুফরীর প্রকারভেদ ।

কুফরী কি ? কোন কাজ মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয় ? কুফরীর প্রকারভেদ

কুফরীর সংজ্ঞা :

কুফরীর আভিধানিক অর্থ আবৃত করা ও গোপন করা।

আর শরীয়তের পরিভাষায় ঈমানের বিপরীত অবস্থানকে কুফরী বলা হয়।কেননা কুফরী হচ্ছে আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান না রাখা, চাই তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হোক কিংবা না হোক। বরং তাদের ব্যাপারে কোন প্রকার সংশয় ও সন্দেহ, উপেক্ষা কিংবা ঈর্ষা, অহংকার কিংবা রাসূলের অনুসরণের প্রতিবন্ধক কোন প্রবৃত্তির অনুসরণ কুফরীর হুকুমে কোন পরিবর্তন আনয়ন করবেনা। যদিও তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী বড় কাফির হিসাবে বিবেচিত। অনুরূপভাবে ঐ অস্বীকারকারী ও বড় কাফির, যে অন্তরে রাসূলগণের সত্যতার প্রতি বিশ্বাস রাখা সত্ত্বেও হিংসাবশতঃ মিথ্যা সাব্যস্ত করে থাকে। [মাজমু আল ফাতওয়া, ৩৩৫]

Saturday, October 25, 2014

প্রশ্ন: অনেকে বলে, আমরা অলী-আউলিয়া ও বুজুর্গ লোকদের নিকট বিপদাপদ থেকে উদ্ধার কামনা করি। তবে তাদের নিকট আমরা যা চাই তা হল কিয়ামতের দিন যেন তারা আল্লাহর দরবারে আমাদের জন্য শাফায়াত করে। কারণ তারা সৎ লোক। আল্লাহর নিকট তাদের বিশাল মর্যাদা রয়েছে। তাই এই মর্যাদার কারণে আমরা চাই তারা আমাদের সুপারিশ করে পরকালে কঠিন বিপদ থেকে আল্লাহ আমাদেরকে উদ্ধার করবেন। এটা কি ঠিক ?

——————————————————————-
উত্তর: আরবের মুশরিকরা তো তাদের শিরকের স্বপক্ষে হুবহু এ কথাই বলত। তার পরে ও মহান আল্লাহ তাদেরকে-কাফের মুশরিক বলে অবিহিত করেছেন। যেমন, আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُولُونَ هَؤُلَاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللَّهِ

“আর তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন জিনিসের উপাসনা করে যা তাদের লাভ-ক্ষতি কিছুই করতে পারে না আর বলে, তারা আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করবে।” (সূরা ইউনুস: ১৮)

সৎ ব্যক্তিগণ কিয়ামতের দিন পাপী বান্দা সুপারিশ করবে। কিন্তু সুপারিশের মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন:

قُلْ لِلَّهِ الشَّفَاعَةُ جَمِيعًا

“বলুন, শাফায়াতের সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব কেবল আল্লাহর।” (সূরা যুমারঃ ৪৪)

সুতরাং যেহেতু শাফায়াতের মালিক আল্লাহ সেহেতু তা চাইতে হবে একমাত্র আল্লাহর নিকট। মৃতদের নিকট চাওয়া যাবে না। কারণ, আল্লাহ তায়ালা কোন, নবী-অলী ফেরেশতা বা অন্য কারো নিকট সুপারিশ প্রার্থনা করার সুযোগ দেন নি। যেহেতু তার মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা তাই সুপারিশ কেবল তার কাছেই চাইতে হবে। যেন তিনি সুপারিশ কারীকে সুপারিশ করার অনুমতি দেন।
কিন্তু দুনিয়ার ব্যাপার সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে অনুমতি ছাড়াই সুপারিশ কারীরা সুপারিশ করতে আসে এবং অনেক সময় অনিচ্ছা স্বত্বেও সুপারিশ গ্রহণ করতে বাধ্য হতে হয়। কারণ সুপারিশ কারীরা হয়ত উচ্চ পর্যায়ের লোক বা সরকারী কর্মকর্তা বা মন্ত্রী। মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের মুখাপেক্ষী হয়।
কিন্তু আল্লাহর দরবারে কেউ সুপারিশ নিয়ে হাজির হতে পারবে না যতক্ষণ না তিনি সুপারিশ কারীকে অনুমতি দিবেন বা যার ব্যাপারে সুপারিশ করা হবে তার ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন:

وَكَمْ مِنْ مَلَكٍ فِي السَّمَاوَاتِ لَا تُغْنِي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا إِلَّا مِنْ بَعْدِ أَنْ يَأْذَنَ اللَّهُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَرْضَى

“আর আসমান সমূহে এমন অনেক ফেরেশতা রয়েছে যাদের শাফাআত কোন কাজে লাগবে না যতক্ষণ না আল্লাহ তায়ালা যাকে ইচ্ছা এবং যার ব্যাপারে সম্মত তার ব্যাপারে সুপারিশের অনুমতি দিবেন। (সূরা নাজম: ২৬)

প্রশ্ন: তারা বলে আল্লাহর নিকট অলী-আউলিয়াদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। তাই আমরা তাদের এ মর্যাদার ওসীলায় আল্লাহর নিকট শাফায়াত প্রত্যাশা করি। এতে সমস্যা কোথায় ?
————————————————————–
উত্তর: প্রতিটি ইমানদার আল্লাহর অলী বা বন্ধু। কিন্তু কোন ব্যক্তি বিশেষকে নির্দিষ্ট করে আল্লাহর অলী বলতে গেলে তার পক্ষে অবশ্যই কুরআন ও হাদীসের দলীল প্রয়োজন। কুরআন ও হাদীসের আলোকে কোন ব্যক্তি আল্লাহর অলী প্রমাণিত হলে তার ব্যাপারে আমাদের বাড়াবড়ি করা বৈধ হবে না। কারণ বাড়াবাড়ি করতে গেলে তাতে র্শিক সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁকে সরাসরি আহবান করতে। তাঁকে পাওয়ার জন্য কোন মাধ্যম ধরার প্রয়োজন নাই।
আরবের মুশরিকদের পক্ষ থেকে এ যুক্তি পেশ করা হয়েছিল যে, তারা মূর্তিগুলোকে আল্লাহ ও তাদের মাঝে কেবল মাধ্যম মনে করে এবং যেহেতু তারা আল্লাহর দরবারে মর্যাদা সম্পন্ন এবং নৈকট্য প্রাপ্ত তাই তাদের মাধ্যমে তারাও আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চায়। কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা তাদের এজাতীয় বিশ্বাস ও কার্যক্রমের প্রতিবাদ করেছেন।

১০টি খারাপ অভ্যাস যা ব্রেইনের জন্য খতিকর

১০টি খারাপ অভ্যাস যা ব্রেইনের জন্য খতিকর

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আল্লাহর দেয়া নেয়ামতগুলো প্রতি যত্ন নেয়া আমাদের কর্তব্য। সে সকল নেয়ামতের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল, মানুষরে ব্রেইন। কিন্তু প্রতিনিয়ত অভ্যাসবশত আমরা কিছু কাজ করে থাকি যা আমাদের ব্রেইনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই ব্রেইনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সতর্ক হবার জন্য জেনে নেওয়া যাক সেই অভ্যাসগুলো।

১। সকালে নাশতা না করা: আমরা অনেকেই ব্যস্ততার কারণে সকালের নাশতা না করেই বাসা থেকে বের হয়ে যাই। কিন্তু এই অভ্যাসটা খুব খারাপ। কারণ সকালে নাশতা না করলে নিম্ন রক্ত শর্করার কারণে আমাদের ব্রেইনে পর্যাপ্ত শর্করা তথা পুষ্টি পায় না। এতে করে ধীরে ধীরে ব্রেইন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই ব্যস্ততা সত্ত্বেও সকালের নাশতা করতে ভুলে যাবেন না।

২। অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণ: অনেক সময় আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণ করি। ধারণা করা হয় মাঝে মাঝে এরকম অতিরিক্ত ডায়েটে কি আর হবে! কিন্তু ধারণাটা ভুল। কারণ অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণের অভ্যাস আমাদের ব্রেইনের রক্তনালীর ইলাস্টিসিটি নষ্ট করে দেয় ফলস্বরূপ অনেক ধরনের মানসিক সমস্যার উৎপত্তি হয়। তাই সর্বদা সচেতন হোন এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণে বিরত থাকুন।

৩। ধূমপান: ধূমপান নানা রোগের অন্যতম কারণ। ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব বলে শেষ করে যাবে না। তাই যারা ধূমপান করেন তাদের জন্য সতর্কবার্তা ধূমপানে কেবল ফুসফুস ক্যান্সার নয় বরং এতে করে ব্রেইন সংকুচিত হয়ে যায় ফল স্বরূপ আলঝেইমার নামক স্মৃতিবিলোপকারি রোগের উদ্ভব হয়।

৪। অতিরিক্ত মিষ্টি গ্রহণ: অনেকের ধারণা মিষ্টি বেশি খেলে ব্রেইন ভাল হয়। কিন্তু আসলে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না। অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে সেটা আমিষ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পরিপাক; শোষণে বাধা সৃষ্টি করে যা ব্রেইনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং ব্রেইনের বিকাশ সাধনের অন্তরায়। তাই অতিরিক্ত মিষ্টি নয় পর্যাপ্ত ও পরিমিত মিষ্টি গ্রহণ করুন।

৫। বায়ু দূষণ: বায়ু দূষণের জন্য আমাদের ব্রেইনের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়। কারণ বায়ু দূষণের ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ বাতাস আমাদের ব্রেইনে যেতে পারে না। ফলে ব্রেইন ধীরে ধীরে পুষ্টির অভাবজনিত কারণে স্বাভাবিক কার্যকারী ক্ষমতা হারাতে থাকে। তাই বায়ু দূষণ যুক্ত পরিবেশ থেকে দূরে থাকুন এবং বায়ু দূষণ রোধে নিজে ও অন্যকে সচেতন করুন।

৬। নিদ্রাহীনতা: ঘুম আমাদের ব্রেইনের বিশ্রামের জন্য জরুরি। তাই পর্যাপ্ত ঘুম ব্রেইন কোষের স্বাভাবিক কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা দীর্ঘদিন যাবত নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন কিংবা কাজের ব্যস্ততার জন্য ঘুমানোর সময় পাচ্ছেন না তাদের জন্য বলছি, নিদ্রাহীনতা আমাদের ব্রেইনের কোষের মৃত্যুর জন্য দায়ী। সুতরাং পর্যাপ্ত ঘুমকে কেবল সময় নষ্ট হিসেবে নয় বরং ব্রেইনের বিশ্রামের জন্য দরকারি হিসেবে নিন।

৭। ঘুমানোর সময় মাথা আবৃত করা: ঘুমাতে যাবার পূর্বে মাথা খোলা রেখে ঘুমানো ব্রেইনের জন্য উপকারী। কারণ মাথা আবৃত করে ঘুমালে কার্বনডাই অক্সাইড এর পরিমাণ ঘনীভূত হয় এবং অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় যা পরবর্তীতে ব্রেইনের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে।

৮। অসুস্থতার সময় অতিরিক্ত কাজ: যখন আমরা অসুস্থ হই তখন আমাদের উচিত কোন পরিশ্রমী কাজ অথবা পড়াশুনা থেকে বিরত থেকে আমাদের ব্রেইন কে বিশ্রাম দেয়া। তা না হলে অসুস্থতার সময় অতিরিক্ত চাপ আমাদের ব্রেইনের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় ফলস্বরূপ ব্রেইনের দীর্ঘমেয়াদী মারাত্মক ক্ষতিসাধন হয়।

৯। চিন্তা না করা: বেশি বেশি চিন্তা করুন, ব্রেইন কোষের উদ্দীপনার জন্য চিন্তা-ভাবনা করা অত্যন্ত জরুরি। যত বেশি সৃষ্টিশীল চিন্তায় মনোযোগ দিতে পারবেন, ততবেশি আপনার ব্রেইন কোষ উদ্দীপিত হবে। আপনি আরও বেশি দক্ষ ও মনোযোগী হতে পারবেন যে কোন কাজে। আর চিন্তাহীন ব্রেইন ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে ব্রেইনের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।

১০। কথা না বলা: অনেকেই চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু অতিরিক্ত চুপচাপ ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর। কারণ আপনি যত বেশি বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় অংশ নিতে পারবেন সেটা আপনার ব্রেইনের স্বাভাবিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই চুপচাপ নয় বরং কার্যক্ষেত্রে বেশি বেশি আলোচনায় অংশ নিয়ে আপনার ব্রেইনকে সতেজ রাখুন।


শির্ক আসল কিভাবে ?

শির্ক আসল কিভাবে ?

আল্লাহ তাআলা মানুষকে পৃথিবীতে তাঁর এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেনঃ আমি জিন ও
মানব জাতিকে আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। (সূরা যারিয়াতঃ ৫৬)

সুতরাং আল্লাহ তাআলা মানুষকে
তাওহীদসহ প্রেরণ করেছেন। তাওহীদ তাদের সৃষ্টিগত স্বভাবের সাথে সামঞ্জস্যশীল। আর শির্ক উহার
ভিতরে নতুনভাবে অনুপ্রবেশ করেছে মাত্র। রাসূল (সাঃ) বলেনঃ

( كل مولود يولد على الفطرة فأبواه يهودانه أو ينصرانه أو يمجسانه )

প্রতিটি শিশু ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতা-মাতাকে তাকে ইহুদী বানায় বা
খৃষ্টান বানায় অথবা অগ্নি পূজক বানায়। (বুখারী ও মুসলিম)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আদম ও নূহ (আঃ)এর মধ্যে ১০টি শতাব্দির ব্যবধান ছিল।
 এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে সকলেই তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। শির্ক সপর্কে তাদের কোন ধারণা
ছিল না। তারপর সৎ লোকদের নিয়ে বাড়াবিাড়ি করার কারণে তাদের মধ্যে সর্বপ্রথম শিক প্রকাশ
পায়। (ইবনে কাছীরঃ ৩/৪৩১)

 সর্ব প্রথম নূহ (আঃ)এর জাতির মধ্যে শির্ক বিস্তার লাভ করে। তাই আল্লাহ তাআলা নূহ (আঃ) কে
তাদের হেদায়াতের জন্য প্রেরণ করেন। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

আমি আপনার প্রতি ওহী পাঠিয়েছি, যেমন করে ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত
নবী-রসূলের প্রতি যারা তার পরে প্রেরিত হয়েছেন। (সূরা নিসাঃ ১৬৩)

নূহ (আঃ) যখন তাদেরকে শির্ক প্রত্যাখ্যান করে এককভাবে আল্লাহর ইবাদত করার প্রতি আহবান
জানালেন, তখন তাঁর জাতির লোকেরা বললঃ

وَقَالُوا لا تَذَرُنَّ آلِهَتَكُمْ وَلا تَذَرُنَّ وَدًّا وَلا سُوَاعًا وَلا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسْرًا

অর্থাৎ তারা বললঃ তোমরা তোমাদের উপাস্যগুলোকে পরিত্যাগ করো না। আর পরিত্যাগ করো না
ওয়াদ, সুওয়া, ইয়াগুস, ইয়াউক ও নসরকে। (সূরা নূহঃ ২৩)

বুখারী ও মুসলিম শরীফে ইবনে আব্বাস (রাঃ)এর বর্ণনায় এসেছে আয়াতে বর্ণিত লোকগুলো ছিলেন
নূহ (আঃ)এর জাতি পূণ্যবান ব্যক্তি। তারা যখন মারা গেল তখন শয়তান তাদেরকে বললঃ তোমরা
তাদের মজলিসে তথা বসার স্থানে তাদের মূর্তি খাড়া করো এবং তাদের নামানুসারে এগুলোর নামকরণ
কর। তখন তারা তাই করলো। তবে তখন সেগুলোর এবাদত হয় নি। দীর্ঘ দিন পর শয়তান তাদের
কাছে পুনরায় আগমণ করে তাদেরকে এগুলোর এবাদত করতে আহবান জানালো। তারা শয়তানের
আহবানে সাড়া দিয়ে শির্কে লিপ্ত হলো।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে সৎ ও পূণ্যবান ব্যক্তিদের ছবি নির্মাণ ও তাদেরকে নিয়ে অতিরঞ্জন করার
কারণেই পৃথিবীতে শির্কের বিস্তার লাভ করেছে।
আরবের লোকেরাও ইবরাহীম (আঃ)এর ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। আমর বিন লহাই নামক এক
ব্যক্তি সর্বপ্রথম ইবরাহীম (আঃ)এর দ্বীনের মধ্যে পরিবর্তন করে। সেই সর্বপ্রথম আরব উপদ্বীপে মূর্তি
পূজা ও শির্কের আমদানী করে। অতঃপর এগুলোর এবাদত চালু হয়ে যায়। পার্শবর্তী দেশগুলোতেও
পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে।
তখন আল্লাহ তাআলা মুহম্মাদ (সাঃ)কে শেষ নবী হিসেবে তাদের কাছে পাঠান। তিনি তাদেরকে
ইবরাহীম (আঃ)এর দ্বীনে ফেরত আসার ও এককভাবে আল্লাহর এবাদত করার আহবান জানান।
তারা তাঁর ডাকে সাড়া দিলো। আরবদেশ সমূহ থেকে শির্কের অবসান হল। মুসলমানেরা দীর্ঘ দিন
তাওহীদের বাণী বিশ্বময় প্রচার করলেন। পৃথিবী তাওহীদের আলোয় আলোকিত হলো। আল্লাহর দিন
পূর্ণতা লাভ করলো।
পরবর্তীতে আবার মুসলিম জাতির মাঝে মুর্খতার প্রসার হল। মুসলমানেরা ধর্মের নামে অন্যান্য ধর্মের
আচরণাদীর অনুসরণ করতে লাগল। সুতরাং পুনরায় তাদের অধিকাংশের মাঝে শির্কের অনুপ্রবেশ
ঘটলো।
এ পর্যায়েও দেখা যায় যেই কারণে নূহ (আঃ)এর জাতির মধ্যে শির্ক প্রবেশ করেছিল, সেই একই
কারণে এই উম্মতের মধ্যে তা প্রবেশ করেছে। পথভ্রষ্ট ও ভ্রান্ত আলেমদের কারণে এবং কবরসমূহ
পাকা করার কারণে। উহা মূলতঃ ঘটেছিল অলী-আওলীয় এবং সৎ লোকদেরকে অতিরিক্ত সম্মান
দেখাতে গিয়ে। এমন কি তাদের কবরের উপর গম্বুজ ও প্রাসাদ তৈরী করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তাদের
কাছে দুআ করা, মদদ প্রার্থনা করা এবং তাদের জন্য পশু যবাইসহ বিভিন্ন প্রকার শির্ক।
এই শির্ককে তারা উসীলা নামে নামকরণ করেছে। তাদের ধারণা অনুযায়ী এটি শির্ক নয় বা
অলী-আওলীয়াদের এবাদত নয়। তারা ভুলে গেছে মক্কার মুশরিকদের কথা। কারণ মক্কার মুশরিকরাও
বলত আমরা লাত-মানাতসহ ইত্যাদির এবাদত করি না। এরা আমাদের জন্য আল্লাহর দরবারে
সুপারিশ করবে। আল্লাহ তাদের কথা কুরআনে উল্লেখ করেছেন।

وَيَقُولُونَ هَؤُلاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللَّهِ

অর্থাৎ এরা হচ্ছে আমাদের জন্য আল্লাহর দরবারে সুপারিশকারী। (সূরা ইউনুসঃ ১৮)
সুতরাং মক্কার মুশরিকদের মধ্যে যেই শির্ক ছিল বর্তমানে মাজার পূজারী নামধারী মুসলমানদের মধ্যে
সেই একই শির্ক বিদ্যমান। তাদেরকে যখন লাত-মানাতসহ অন্যান্য মূর্তির উপাসনা ত্যাগ করে
এককভাবে আল্লাহর এবাদত করতে বলা হত তখন তারা বলতঃ
আমরা এদের এবাদত এজন্য করি
যে তারা আমাদেরকে আল্লাহর দরবারে পৌঁছিয়ে দিবে। সরাসরি আমরা তাদের উপসনা করি না।

কুরআনে তাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

مَا نَعْبُدُهُمْ إِلا لِيُقَرِّبُونَا إِلَى اللَّهِ زُلْفَى

অর্থাৎ আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহ্র নিকটবর্তী করে দেয়।
(সূরা যুমারঃ ৩)
আপনি যদি বর্তমানে মাজারপন্থী ও পীরপন্থীদের প্রতিবাদ করেন তাহলে তারাও বলছে, আমরা
অলী-আওলীয়াদের এবাদত করি না; বরং তারা উসীলা মাত্র। তাদের উসীলায় আমরা আল্লাহর
উপাসনা করি এবং আমরা তাদের সুপারিশ কামনা করি মাত্র।
প্রিয় পাঠকগণ লক্ষ্য করুন! নূহ (আঃ)এর জাতি এবং মক্কাবাসীরাও সৎ লোকদের সরাসরি এবাদত
করত না, তারা বলতঃ এরা আমাদের উসীলা মাত্র। বর্তমান যামানার অলী-আওলীয়ার পূজাকারীগণ
একই কথা বলছে।

চাঁদ যদি না থাকতো

চাঁদ যদি না থাকতো তবে কেমন হতো আমাদের এই চাঁদহীন দুনিয়া ? চাঁদ না থাকলে থাকতো না চন্দ্র কিংবা গড়ড়হ বলে শব্দ। থাকতো না চাঁদমুখ, চন্দ্রমুখী, অর্ধচন্দ্র, মধুচন্দ্র্রিমা, চাঁদনিরাত, honeymoon, hunters moon(পূূর্ণিমার চাঁদ), New moon(অমাবস্যা), moon beam (চাঁদের আলো), moon calf (আজন্ম নির্বোধ), moonlight (চাঁদনি), moon rise (চন্দ্রোদয়), moonset (চন্দ্রাস্ত), moonstone(চন্দ্রকান্তমণি) এমনি আরো অনেক শব্দ।
চাঁদ না থাকলে চাঁদ এর কক্ষপথে ঘুরতো না। তখন পৃথিবী এর নিজ অক্ষের ওপর আরো বেশি গতিতে ঘুরতো। কারণ, পৃথিবীর সমুদ্রের ওপর চাদের টান (Gravity pull) কাজ করতো না। চাঁদের টানেই তো পৃথিবীতে জোয়ার-ভাটা হয়। পৃথিবীর ওপর চাঁদের টান ও স্রোতের প্রবাহের ওপর চাঁদের প্রভাবে পৃথিবীর প্রতিদিনের ঘূর্ণনগতি কমে যায়। শত শত কোটি বছর আগে পৃথিবী এর নিজ অক্ষের ওপর আরো অনেক বেশি গতিতে ঘুরতো। এক সময় দিন ও বাতের চক্র ঘটতো ১০ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে।
পৃথিবী যদি নিজ অক্ষের ওপর আরো বেশি গতিতে ঘুরতো, তার আরো নানা ধরনের প্রভাব লক্ষ্য করা যেত। বায়ু প্রবাহের গতি আরো বেশি হতো। কোনো প্রবাহ ঘটতো আরো বেশি সময় ধরে। জুপিটার গ্রহের কথাই ধরা যাক। জুপিটার তার নিজের অক্ষের ওপর একবার ঘুরতে সময় নেয় প্রায় ১০ ঘণ্টা। সে জন্য জুপিটারে প্রচুর হ্যারিকেন দেখা দেয় এবং এ হ্যারিকেন চলতে পারে শতবর্ষ ধরে।
চাঁদ না থাকলে পৃথিবীর প্রাণীর ওপরও এর একটা দৃশ্যমান প্রভাব পড়তো। যেমন বায়ুপ্রবাহের ধরন পাল্টে গেলে এর প্রভাব পড়তো আমাদের হাঁটাচলা, কাজকর্ম, কথাবলা ইত্যাদির ওপরও। এর প্রভাব পড়তো সমুদ্রের জাহাজ চলাচলের ওপরও। সে জন্য বলা যায়, মহাকাশে আমাদের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী চাঁদ আমাদের জীবনযাত্রার এক বড় অংশ। সে জন্য এর পর যখন চাঁদের দিকে তাকাবেন, তখন ভাববেন চাঁদ আমাদের জীবনে কী ভূমিকা পালন করছে, আর চাঁদ না থাকলেই বা আমরা কী হারাতাম।

কুরআন পাঠ সম্পর্কে কতিপয় হাদীস

কুরআন পাঠ সম্পর্কে কতিপয় হাদীস

কুরআন আল্লাহর বাণী। সৃষ্টিকুলের উপর যেমন স্রষ্টার সম্মান ও মর্যাদা অপরিসীম , তেমনি সকল বাণীর উপর কুরআনের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অতুলনীয়। মানুষের মুখে থেকে যা উচ্চারিত হয়, তম্মধ্যে কুরআন পাঠ সর্বাধিক উত্তম।

নিম্নে কুরআন পাঠের প্রতিদান সম্পর্কে কতিপয় হাদীস উপস্থাপন করা হল :

কুরআন শিখানোর প্রতিদান : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : خير كم من تعلم القراّن وعلمه “তোমাদের মাঝে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কুরআন শিক্ষাকরে ও অন্যকে তা শিক্ষা দেয়।” (বুখারী)
কুরআন পাঠের প্রতিদান : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : من قرأ حرفا من كتاب الله فله به حسنة و الحسنة بعشر أمثالها “যে ব্যক্তি পবিত্র কুরআনের একটি অক্ষর পড়বে, সে একটি নেকী পাবে। আর একটি নেকী দশটি নেকীর সমপরিমাণ।” (তিরমিযী)

কুরআন পাঠে যত্ম নেয়ার প্রতিদান: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করবে এবং তা মুখস্থ করবে (এবং বিধি-বিধানের) প্রতি যত্নবান হবে, সে উচ্চ সম্মানিত ফেরেশতাদের সাথে অবস্থান করবে। আর যে ব্যক্তি কষ্ট হওয়া স্বত্বেও কুরআন পাঠ করবে এবং তার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখবে সে দ্বিগুণ ছাওয়াবের অধিকারী হবে (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “কিয়ামত দিবসে কুরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে, কুরআন পড় এবং উপরে উঠ। যেভাবে দুনিয়াতে তারতীলের সাথে কুরআন পড়তে সেভাবে পড়। যেখানে তোমার আয়াত পাঠ করা শেষ হবে, জান্নাতের সেই সুউচ্চ স্থানে তোমার বাসস্থান।” (তিরমিযী)

ইমাম খাত্তাবী (রহঃ) বলেন: হাদীসে এসেছে যে, জান্নাতের সিঁড়ির সংখ্যা হচ্ছে কুরআনের আয়াতের সংখ্যা পরিমাণ। কুরআনের পাঠককে বলা হবে, তুমি যতটুকু কুরআন পড়েছো ততটি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠো। যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ কুরআন পড়েছে সে আখেরাতে জান্নাতের সর্বশেষ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যাবে। যে ব্যক্তি কুরআনের কিছু অংশ পড়েছে সে ততটুকু উপরে উঠবে। অর্থাৎ যেখানে তার পড়া শেষ হবে সেখানে তার ছওয়াবের শেষ সীমানা হবে।”

কুরআন শুপারিশকারী হবে: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : اقرءوا القراّن فإنه ياتي يوم القيامة شفيعا لأصحابه “তোমরা কুরআন পাঠ কর। কেননা কিয়ামতের দিবসে কুরআন তার পাঠকের জন্য সুপারিশ কারী হবে।” (মুসলিম) তিনি আরও বলেন: الصيام و القراّن يشفعان للعبد يوم القيامة

” কিয়ামত দিবসে সিয়াম ও কুরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে।” (আহমদ, হাকেম হাদীস সহীহ দ্রঃ সহীহ তারগীব তারহীব হা/৯৮৪)

কুরআন নিয়ে পরস্পরিক আলোচনা-পর্যালোচনা করার প্রতিদান: রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “কোন সম্প্রদায় যদি আল্লাহর কোন ঘরে একত্রিত হয়ে কুরআন পাঠ করে এবং তা পরস্পরে শিক্ষা লাভ করে, তবে তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল হয়, আল্লাহর রহমত তাদেরকে আচ্ছাদিত করে এবং ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে রাখে। আর আল্লাহ তাঁর নিকটস্থ ফেরেশতাদের সামনে তাদের কথা আলোচনা করেন।” (মুসলিম)

কিভাবে কুরআন পাঠ করবে ? আনাছ বিন মালেক (রা:) কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কুরআন পাঠের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন: ” তিনি টেনে টেনে পড়তেন .” বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” পাঠ করার সময় ” বিসমিল্লাহ” টেনে পড়তেন. “আর রহমান” টেনে পড়তেন “আর রাহীম” টেনে পড়তেন। (বুখারী )

একশটি কবীরা গুনাহ

কবীরা গুনাহ কাকে বলে ?

কবীরা গুনাহ বলা হয় ঐ সকল বড় বড় পাপকর্ম সমূহকে যেগুলোতে নিন্মোক্ত কোন একটি বিষয় পাওয়া যাবে :
যে সকল গুনাহের ব্যাপারে ইসলামে শরীয়তে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
যে সকল গুনাহের ব্যাপারে দুনিয়াতে নির্ধারিত দণ্ড প্রয়োগের কথা রয়েছে।
যে সকল কাজে আল্লাহ তায়ালা রাগ করেন।
যে সকল কাজে আল্লাহ তায়ালা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ফেরেশতা মণ্ডলী লানত দেন।
যে কাজের ব্যাপারে বলা হয়েছে, যে এমনটি করবে সে মুসলমানদের দলভুক্ত নয়।
কিংবা যে কাজের ব্যাপারে আল্লাহ ও রাসূলের সাথে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
যে কাজে দ্বীন নাই, ঈমান নাই ইত্যাদি বলা হয়েছে।
যে ব্যাপারে বলা হয়েছে ্‌এটি মুনাফিকের আলামত বা মুনাফিকের কাজ।
অথবা যে কাজকে আল্লাহ তায়ালা সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয় করা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকার মর্যাদাঃ

১. মহান আল্লাহ বলেন :

إِن تَجْتَنِبُوا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَنُدْخِلْكُم مُّدْخَلًا كَرِيمًا

“যেগুলো স¤পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার। তবে আমি তোমাদের (ছাট) গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব।” (সূরা নিসা: ৩১)

মুমিনদের জন্যে আল্লাহর পক্ষ হতে ২৫টি প্রতিশ্রুতি

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের মনে অবশ্যই এই ধারণা জন্মানো উচিত যে, যখন আল্লাহ্‌ কোন প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন তখন তিনি তা পূরণ করেই থাকেন, আর প্রতিশ্রুতি পূরণ করাই আল্লাহ্‌র সুন্নাহ।
“আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আল্লাহ প্রতিশ্রুতির খেলাফ করেন না।” [সূরা ঝুমার ২০]
এবং আরেকটি আয়াতে তিনি বলছেন,
“সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহর ওয়াদা যথার্থ। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়”। [লুকমান ৯ ]

কাজেই যখন কাউকে দেখা যায় যে সে দাবী করছে তার জীবনে আল্লাহ্‌র দেয়া ওয়াদা কার্যকর হয়নি, কিংবা আল্লাহর প্রতিশ্রুত সাহায্য এসে পৌঁছায়নি কিংবা ভবিষ্যতেও যদি না এসে থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির জন্য অনুচিত কাজ হল আল্লাহ্‌র দেয়া ওয়াদার প্রতি সন্দেহ করা, আর উচিত কাজ হল তার নিজের ঈমানের প্রতি সন্দেহ পোষণ করা। এই সমসস্যা সৃষ্টি হয়েছে তার নিজের কারণে , কারণ যদি কেউ আল্লাহ্‌র প্রতি সত্যবাদী থাকে তাহলে আল্লাহও তার প্রতি সত্যবাদী থাকেন, আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুত ওয়াদায় কোন সমস্যা নেই, সমস্যা আমাদের ঈমানে।

১ম প্রতিশ্রুতি

জান্নাত

পরিবারে সবার মন জয় করার কিছু সহজ টিপস

আমাদের সমাজে একটা মেয়ের জন্য বিয়ের পর স্বামীকে ঘিরেই তাঁর জগত তাঁর সংসার তাঁর সুখ-দুঃখ সাধারণত এরকমটা খুবই কম হয় ।বিয়ের পর সে প্রবেশ করে নতুন একটা পরিবার পরিবেশে আর সেখানে থাকে অনেক রকমের মন মানসিকতা, চিন্তা-ভাবনা বিভিন্ন রুচি বোধের মানুষ, আর এদের সবাইকে নিয়েই একটা পরিবার ।একটা নারী যখন নতুন একটা সংসারে প্রবেশ করে তখন সবার আগে যা দরকার সেটা হল নিজেকে সবার সাথে মানিয়ে নেয়ার মানসিকতা । আর একজন নারীর শিক্ষা-দীক্ষা তখনই সার্থক হয় যখন তাঁর শিক্ষার আলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে। তাই পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মাঝে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রেখে সংসারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই একজন নারীর সফলতা । নতুন পরিবারে যার ভুমিকা সবচেয়ে বেশি সে হল তাঁর শাশুড়ি। বিয়ের পর মেয়েরা যখন তার শ্বশুরবাড়ি আসে তখন এই শাশুড়িই তার মায়ের জায়গা পূরণ করে নেয়।
বেশির ভাগ সময় এই সম্পর্কটার মাঝে অনেক তিক্ততা সৃষ্টি হয় ভুল বুঝাবুঝির কারণে আর একটু সচেতনতাই পারে এ সম্পর্কটাকে মধুর করে রাখতে। এর জন্য চাই কিছুটা কৌশল, আসুন জেনে নেই ছোট ছোট কিছু কৌশল যা আপনাকে করে তুলবে তাঁর সবচেয়ে আদরিনী।

১. মনোমালিন্যের উৎসই যে জায়গাটা থেকে সেখানেই হোন বেশ সচেতন। রান্নাঘর- চেষ্টা করুন একটু গুছিয়ে ও পরিষ্কার রাখতে। দৈনন্দিন কাজে শাশুড়িকে সাহায্যের পাশাপাশি গোপনে তার কিছু প্রিয় খাবার বানিয়ে তাকে চমকে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে স্বামীর সাহায্যো নিতে পারেন।

Sunday, October 19, 2014

হজ্জের পর হাজী সাহেবের করণীয়

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

হজ্জের পর কী ?

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য, যাঁর নেয়ামতেই সকল সৎকাজসমূহ সম্পন্ন হয়ে থাকে, আর তাঁর দয়াতেই সকল ইবাদাত কবুল হয়ে থাকে। আমরা তাঁর প্রশংসা করছি, তাঁর শুকরিয়া আদায় করছি, আর এ সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোন হক মা‌‘বুদ নেই এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ্ তার উপর, তার পরিবার ও সঙ্গী সাথীদের উপর দুরুদ প্রেরণ করুন এবং বহু পরিমানে সালাম পেশ করুন। তারপর,
হজ্ গত হল, তার কার্যাদি পূর্ণ হলো, আর হজের মাসসমূহ তার কল্যাণ ও বরকত নিয়ে চলে গেল। এ দিনগুলো অতিবাহিত হলো, আর মুসলিমগণ তাতে তাদের হজ সম্পাদন করল, তাদের কেউ আদায় করল ফরয হজ্, অপর কেউ আদায় করল নফল হজ্, তাদের মধ্যে যাদের হজ কবুল হয়েছে তারা তাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে নিয়ে এমন দিনের মত প্রত্যাবর্তন করল যেমন তাদের মাতাগণ তাদেরকে জন্ম দিয়েছিল। সুতরাং সফলকামদের জন্য রয়েছে মুবারকবাদ। যাদের থেকে তা গ্রহণযোগ্য হয়েছে তাদের সৌভাগ্যই সৌভাগ্য!
“আল্লাহ তো কেবল মুত্তাকীদের পক্ষ থেকেই কবুল করে থাকেন”।[1]

ইসলামে আদর্শ নারীর বৈশিষ্ঠ্য

ইসলামে আদর্শ নারীর বৈশিষ্ঠ্য

মুসলিম সমাজ তথা মুসলিম জাতির পরিপূর্ণতার জন্য এমন রণশীল আদর্শ নারীর প্রয়োজন, যে তার দায়িত্ব দায়িত্ব¡ ও কর্তব্য সম্পর্কে জানে এবং তার উপর অর্পিত আমানতকে অনুধাবন করে; যে নিজের পথ দেখতে পায় এবং তার নিজের অধিকার ও অন্যের অধিকার সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে।
 পুরুষের উপর প্রভাব সৃষ্টির ত্রে নারীর বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে। একটি উত্তম পরিবার, সুন্দর সমাজ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনে আদর্শ নারীর বিকল্প নেই। পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে আদর্শ নারীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো:
অবিচল ইমান
 ঈমান তথা দৃড় বিশ্বাস, আর এটা হল সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ এবং আবশ্যকীয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা উত্তম প্রতিদান প্রাপ্তির সাথে তাঁর প্রতি ঈমানের শর্তারোপ করেছেন; তিনি বলেন :

 وَمَن يَعۡمَلۡ مِنَ ٱلصَّٰلِحَٰتِ مِن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِنٞ فَأُوْلَٰٓئِكَ يَدۡخُلُونَ ٱلۡجَنَّةَ وَلَا يُظۡلَمُونَ نَقِيرٗ
“এবং পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ ইমানের সাথে সৎ কাজ করবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি অণু পরিমাণও যুলুম করা হবে না।” (আল কুরআন, সূরা আন-নিসা: ১২৪ )

তাছাড়া এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আরও অনেক আয়াত রয়েছে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ইসলাম

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বর্তমানে দেশের জাতীয় সমস্যাগুলোর অন্যতম। দ্রমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের সাধারণ মানুষ এখন দিশেহারা। অধিকাংশ নিত্যপণ্যের মূল্যই এখন নিম্ন-আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মূল্য হরদম বেড়েই চলেছে।
বিশদ পর্যালোচনার মাধ্যমে দেশের ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যে কারণগুলো বেরিয়ে আসে, তা নিম্নরূপ :
১. ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ। এক শ্রেণীর অতি মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ গড়ে তুলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বলে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। সরকারও বিভিন্ন সময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটকেই দায়ী করেছে।
২. শিল্প মালিক, উদ্যোক্তা, উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের ওপর মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আরেকটি কারণ। ব্যবসায়ী এবং উৎপাদকেরা চাঁদাবাজদের প্রদত্ত চাঁদার ক্ষতি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে পুষিয়ে নেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাধারণ ভোক্তারা।

আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির কিছু নিদর্শন

আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির কিছু নিদর্শন

আল্লাহ তাআলার মহাবৈশ্বয়িক কিছু নিদর্শন নিয়ে চিন্তা করা আল্লার অসীম শক্তি সম্পর্কে বান্দার ঈমান বাড়িয়ে দেয়।আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে তার আসমান জমিনের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার নর্দেশ দিয়েছেন, যাতে বান্দা বুঝতে পারে এ মহাবিশ্বের একজন পরিচালক রয়েছেন, যিনি ইবাদতের একমাত্র উপযুক্ত। খুতবায় বিষয়টি সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রথম খুৎবা 

 الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَجَعَلَ الظُّلُمَاتِ وَالنُّورَ ثُمَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ يَعْدِلُونَ. هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ طِينٍ ثُمَّ قَضَى أَجَلًا وَأَجَلٌ مُسَمًّى عِنْدَهُ ثُمَّ أَنْتُمْ تَمْتَرُونَ. وَهُوَ اللَّهُ فِي السَّمَاوَاتِ وَفِي الْأَرْضِ يَعْلَمُ سِرَّكُمْ وَجَهْرَكُمْ وَيَعْلَمُ مَا تَكْسِبُونَ. وَمَا تَأْتِيهِمْ مِنْ آَيَةٍ مِنْ آَيَاتِ رَبِّهِمْ إِلَّا كَانُوا عَنْهَا مُعْرِضِينَ .(الأنعام:1 وأَشْهَدُ أَن لَّا إَلَهَ إِلَّا اللهُ وّحْدَهُ لَاشَرِيْكَ لَهُ، وأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، أَمَّا بَعْدُ:


মুহতারাম হাযেরীন! আজকের খুতবায় আমরা একিট গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আর তা হলো মহাবৈশ্বয়িক কিছু নিদর্শন, যা আল্লাহ তাআলার অস্তিত্ব ও একত্ববাদের জাজ্জ্বল্যমান প্রমাণ বহনকারী। আকাশ ও পৃথিবী, গ্রহ-নক্ষত্র, লতাগুল্মসহ মহাবিশ্বের সকল কিছুই আল্লাহ তাআলার একত্ববাদের ঘোষক এবং একমাত্র তিনিই যে ইবাদত-বন্দেগী, দু‘আ-প্রার্থনা, চূড়ান্ত ভক্তি-ভয়-ভালোবাসার পাত্র তার অকপট সাক্ষী। মহাবিশ্বের নানা বিষয়, ঘটনা-অনুঘটনা অনুসান্ধানী দৃষ্টিতে খুঁটিয়ে দেখলে বিষয়টি অত্যুজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠে। এবার আসুন তাহলে, এ বিষয়ক কয়েকটি আয়াত অধ্যয়নে মনোনিবেশ করি। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

أَوَلَمْ يَنْظُرُوا فِي مَلَكُوتِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا خَلَقَ اللَّهُ مِنْ شَيْءٍ وَأَنْ عَسَى أَنْ يَكُونَ قَدِ اقْتَرَبَ أَجَلُهُمْ فَبِأَيِّ حَدِيثٍ بَعْدَهُ يُؤْمِنُونَ. ‘

তারা কি দৃষ্টিপাত করেনি আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্বে এবং আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তার প্রতি ? আর (এর প্রতি যে) হয়তো তাদের নির্দিষ্ট সময় নিকটে এসে গিয়েছে? সুতরাং তারা এরপর আর কোন্ কথার প্রতি ঈমান আনবে?’ (সূরা আল আ‘রাফ : ১৮৫)।

আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেন: أَفَلَمْ يَنْظُرُوا إِلَى السَّمَاءِ فَوْقَهُمْ كَيْفَ بَنَيْنَاهَا وَزَيَّنَّاهَا وَمَا لَهَا مِنْ فُرُوجٍ. وَالْأَرْضَ مَدَدْنَاهَا وَأَلْقَيْنَا فِيهَا رَوَاسِيَ وَأَنْبَتْنَا فِيهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ بَهِيجٍ ‘

তারা কি তাদের উপরে আসমানের দিকে তাকায় না, কিভাবে আমি তা বানিয়েছি এবং তা সুশোভিত করেছি? আর তাতে কোনো ফাটল নেই। আর আমি যমীনকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক প্রকারের সুদৃশ্য উদ্ভিদ উদ্গত করেছি আল্লাহ অভিমুখী প্রতিটি বান্দার জন্য জ্ঞান ও উপদেশ হিসেবে’ (সূরা কাফ : ৬-৮)।

আল্লাহ তাআলা অন্যত্র ইরশাদ করেন:

أَفَلَا يَنْظُرُونَ إِلَى الْإِبِلِ كَيْفَ خُلِقَتْ . وَإِلَى السَّمَاءِ كَيْفَ رُفِعَتْ . وَإِلَى الْجِبَالِ كَيْفَ نُصِبَتْ . وَإِلَى الْأَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ . ‘

তবে কি তারা উটের প্রতি দৃষ্টিপাত করে না, কীভাবে তা সৃষ্টি করা হয়েছে? আর আকাশের দিকে, কীভাবে তা ঊর্ধ্বে স্থাপন করা হয়েছে  ? আর পর্বতমালার দিকে, কীভাবে তা স্থাপন করা হয়েছে? আর যমীনের দিকে, কীভাবে তা বিস্তৃত করা হয়েছে ?’ (সূরা আল গাশিয়া : ১৭-২০)।

আল্লাহ তাআলার কতিপয় নিদর্শন

আল্লাহ তাআলার নিদর্শনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, আসমান ও যমীনের সৃষ্টি। সুতরাং যে ব্যক্তি আসমানের দিকে তাকাবে, আসমানের নিপুণ সৃষ্টি, আসমানের সৌন্দর্য-বৈচিত্র্য এবং তার সুউচ্চতা ও শক্তির প্রতি লক্ষ্য করবে, সে তার মধ্য দিয়ে আল্লাহ তাআলার অসীম শক্তি ও ক্ষমতাই দেখতে পাবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: أَأَنْتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَاءُ بَنَاهَا . رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّاهَا ‘তোমাদেরকে সৃষ্টি করা অধিক কঠিন, না আসমান সৃষ্টি? তিনি তা বানিয়েছেন। তিনি তার ছাদকে উচ্চ করেছেন এবং তাকে সুসম্পন্ন করেছেন’ (সূরা আন-নাযিয়াত : ২৭-২৮)।

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন: وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ

‘আর আমি হাতসমূহ দ্বারা আকাশ নির্মাণ করেছি এবং নিশ্চয় আমি সম্প্রসারণকারী’ (সূরা আয-যারিয়াত : ৪৭)।

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ

‘অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে’ (সূরা মুলক : ৪)।

আর যে যমীন তথা ভূপৃষ্ঠের দিকে তাকাবে, সে দেখতে পাবে কীভাবে আল্লাহ তাআলা একে সুগম করেছেন, এর মধ্যে আমাদের জন্য রাস্তা বানিয়েছেন, এর উপরিভাগে দৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, এতে বরকত দিয়েছেন, এতে সমভাবে খাদ্য নিরূপণ করে দিয়েছেন এবং বান্দাদের জন্য এসব আহরণ করা সহজ করে দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: وَجَعَلَ فِيهَا رَوَاسِيَ مِنْ فَوْقِهَا وَبَارَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَا أَقْوَاتَهَا فِي أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَاءً لِلسَّائِلِينَ

‘আর তার উপরিভাগে তিনি দৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছেন এবং তাতে বরকত দিয়েছেন, আর তাতে চারদিনে প্রার্থীদের জন্য সমভাবে খাদ্য নিরূপণ করে দিয়েছেন’ (সূরা ফুসসিলাত : ১০)।

বান্দারা যাতে রিযক অন্বেষণ করতে পারে তাই আল্লাহ তাআলা যমীনকে সমতল বানিয়েছেন। বান্দারা যমীনে চাষাবাদ করে, যমীন থেকে পানি বের করে তা পান করে তৃপ্ত হয়। আল্লাহ তাআলা যমীনকে স্থির করেছেন, তাঁর নির্দেশ ছাড়া তা নড়ে না বা কম্পিত হয় না।

আল্লাহ তাআলা, তাই, ইরশাদ করেন: وَفِي الْأَرْضِ آَيَاتٌ لِلْمُوقِنِينَ  

‘সুনিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য যমীনে অনেক নিদর্শন রয়েছে’ ( সূরা আয-যারিয়াত : ২০)।

প্রিয় ভাই ও বন্ধুগণ! আল্লাহ তাআলার আরেক নিদর্শন তাঁর গড়া আসমান-যমীনের অসংখ্য জীব। আসমানে অসংখ্য-অগণিত ফেরেশতা রয়েছেন, যার সঠিক সংখ্যা একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলাই জানেন। যমীনে আল্লাহ তাআলা যে কত জাতের কত প্রজাতির জীব সৃষ্টি করেছেন,তিনি ছাড়া তা কেউ জানে না। আর এগুলোর সংখ্যা যে কত তাও কল্পনার অতীত। এসব জীব আবার নানা প্রজাতির, নানা রঙের এবং নানা ধরনের। এর মধ্যে কিছু আছে যা আমাদের জন্য উপকারী। এর দ্বারা আল্লাহর নিয়ামতের পূর্ণতা উপলব্ধি করা যায়। আবার কিছু আছে মানুষের জন্য ক্ষতিকর, এর দ্বারা মানুষের নিজের জীবনের মূল্য এবং আল্লাহর সৃষ্টির সামনে তার দুর্বলতার অনুভূতি লাভ হয়। এসব সৃষ্টির প্রত্যেকেই কিন্তু আল্লাহর প্রশংসা ও গুণাগুণ বর্ণনা করে। আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইরশাদ করেন :

تُسَبِّحُ لَهُ السَّمَوَاتُ السَّبْعُ وَالْأَرْضُ وَمَنْ فِيهِنَّ وَإِنْ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا يُسَبِّحُ بِحَمْدِهِ وَلَكِنْ لَا تَفْقَهُونَ تَسْبِيحَهُمْ إِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُورًا.

‘ সাত আসমান ও যমীন এবং এগুলোর মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছু তাঁর তাসবীহ পাঠ করে এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর প্রসংশায় তাসবীহ পাঠ করে না; কিন্তু তাদের তাসবীহ তোমরা বুঝ না। নিশ্চয় তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ’ (সূরা বনী ইসরাঈল : ৪৪)।

সমস্ত প্রাণীর রিযকও আল্লাহ তাআলা দিয়ে থাকেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِي كِتَابٍ مُبِينٍ

‘ আর যমীনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণীর রিযকের দায়িত্ব আল্লাহরই এবং তিনি জানেন তাদের আবাসস্থল ও সমাধিস্থল। সব কিছু আছে স্পষ্ট কিতাবে’ (সূরা হূদ : ৬)।

আল্লাহ তাআলার নিদর্শনের মধ্যে আরও আছে দিন-রাতের সৃষ্টি। রাতকে আল্লাহ রাব্বুল ইয্যত সৃষ্টি করেছেন আমাদের প্রশান্তি লাভের জন্য। আমরা এতে নিদ্রা যাই এবং সারাদিনের ক্লান্তি দূর করি। আর দিনকে সৃষ্টি করেছেন জীবিকা অর্জনের জন্য। এ সময় মানুষ আপন জীবিকা অর্জনে ব্যস্ত থাকে।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন فَالِقُ الْإِصْبَاحِ وَجَعَلَ اللَّيْلَ سَكَنًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ حُسْبَانًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ ‘

তিনি) প্রভাত উদ্ভাসিতকারী। তিনি বানিয়েছেন রাতকে প্রশান্তি এবং সূর্য ও চন্দ্রকে সময় নিরূপক। এটা সর্বজ্ঞ পরাক্রমশালীর নির্ধারণ’ (সূরা আনআম : ৯৬)।

প্রিয় মুসল্লিয়ানে কেরাম! আল্লাহ তাআলা যদি রাতের পর দিন না আনেন, তাহলে আমরা কি জীবিকা সংগ্রহ করতে পারব ? যদি এমন হয় তাহলে পৃথিবীর কোনো সরকার, আমেরিকা বা ইংল্যান্ডের মহাক্ষমতাধর প্রেসিডেন্টও কি পারবে আমাদের জন্য দিন এনে দিতে ? দেখুন আল্লাহ তাআলা কত সুন্দর করে আমাদের কে সেকথা বুঝিয়ে দিচ্ছেন :

قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ جَعَلَ اللَّهُ عَلَيْكُمُ اللَّيْلَ سَرْمَدًا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَنْ إِلَهٌ غَيْرُ اللَّهِ يَأْتِيكُمْ بِضِيَاءٍ أَفَلَا تَسْمَعُونَ.

‘ বল, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি আল্লাহ রাতকে তোমাদের উপর কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী করে দেন, তবে তাঁর পরিবর্তে কোনো ইলাহ আছে কি যে তোমাদের আলো এনে দেবে ? তবুও কি তোমরা শুনবে না? (সূরা আল-কাসাস : ৭১)

আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ! এই মহাবিশ্ব, এই মহা বিশ্বের সব কিছু একমাত্র আল্লাহ তাআলাই সৃষ্টি করেছেন। তার কোনো শরীক বা অংশীদার নেই। তাই একমাত্র তিনিই ইবাদতের উপযুক্ত।

কোনো কিছুই নিজে নিজে সৃষ্টি হয়নি

প্রিয় ভাইয়েরা আমার! চিন্তা করে দেখুন, এসব সৃষ্টির কোনোটাই কিন্তু নিজে নিজে সৃষ্টি হয়নি। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই সকল সৃষ্টির স্রষ্টা। ইরশাদ হয়েছে : أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ . أَمْ خَلَقُوا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بَل لَا يُوقِنُونَ. ‘ তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারাই স্রষ্টা? তারা কি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না’ (সূরা আত-তূর : ৩৫-৩৬)।

মুমিন-মুসলমান ভাইয়েরা! আপনাদের যদি বলা হয়, একটি বিশাল অট্টালিকা বা একটি রাজপ্রাসাদ নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে, তাহলে আপনারা নিশ্চয় এটা বিশ্বাস করবেন না। যদি কেউ বলে, দেখ, এই দালানটি হঠাৎ নিজের থেকে তৈরি হয়ে গেল, আপনারা তাকে পাগল বলবেন। তাহলে বলুন, এ বিশ্ব চরাচর, এই যে সুউচ্চ আকাশ আর সুবিস্তৃত যমীন, এই ঊর্ধ্বজগত আর নিম্নজগত কীভাবে একজন স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হতে পারে ? কোনো বানানেওয়ালা ছাড়া আকস্মিকভাবে অস্তিত্ব লাভ করতে পারে ? নিশ্চয় এসবের একজন স্রষ্টা আছেন। একজন অসীম ক্ষমতাবান নিয়ন্ত্রক আছেন। হ্যা, তিনিই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা।

ডারউইনের থিওরি একটি ভ্রান্ত মতবাদ

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বন্ধুগণ! বর্তমান যুগে তথাকথিত কিছু শিক্ষিত লোক ডারউইনের বিবর্তনবাদ থিওরিতে বিশ্বাস করে। মানুষ নাকি প্রথমে বানর ছিল। তারপর ক্রমবিবর্তনের ধারায় সেখান থেকে তারা মানুষে রূপান্তরিত হয়েছে। এটি বাস্তবতার ওপর জুুলুম ও সীমালঙ্ঘন ছাড়া কিছুই নয়। বিবর্তনবাদ এমন একটি মতবাদ, যা আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। মানুষের অভিজ্ঞতা বা পর্যবেক্ষণ কিছুই এ চিন্তার সত্যায়ন করে না। এমন বাতুলতাপূর্ণ চিন্তায় বিশ্বাস করে কেউ ঈমানহারা হবেন না। এ মতবাদকে খণ্ডন করে বিজ্ঞানী ও আলেমগণ অনেক বই লিখেছেন। আপনারা সেগুলো পড়লেই বুঝবেন বিষয়টি কতটা অসার ও হাস্যকর।

بَارَكَ اللهُ لِيْ وَلَكُمْ فِي الْقُرْآن الْعَظِيْمِ وَنَفَعَنِيْ وَإِيَّاكُمْ بِمَا فِيْهِ مِنَ الْآياتِ وَالذِّكْر الحْكِيْمِ، أقُوْلُ قَوْلِيْ هَذَا وَأَسْتَغْفِرُ اللهَ لِيْ وَلَكُمْ فَاسْتَغْفِرُوهُ إِنَّهُ هُو الْغَفُور الرَّحِيْمْ .


দ্বিতীয় খুৎবা

اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، نَصَبَ مِنْ آيَاتِهِ عَلَى وَحْدَانِيَّتِهِ دَلَيْلاً، وَأَشْهَدُ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ، رَبُّ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَاتَّخِذْهُ وَكِيْلاً، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، أَمَّا بَعْدُ:

প্রিয় ভাইয়েরা! আল্লাহর যেসব নিয়ামতের জন্য আমাদের শুকরিয়া করা উচিত, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো :এসব সৃষ্টিকে আমাদের অনুগত করে দেয়া। তিনি হাজার হাজার মাখলুকাত আমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং সেগুলোকে আমাদের অনুগত বানিয়েছেন। তাই আমাদের অবশ্যই আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া জানানো উচিত।

বেরাদারানে ইসলাম! আল্লাহ তাআলাকে ভয় করুন। তিনি যে আপনাকে ও আমাকে হিদায়েত দিয়েছেন, আমরা যা জানতাম না তা শিখিয়েছেন, আমাদের দুনিয়া-আখিরাতে যা কল্যাণকর তার জ্ঞান তিনি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। আর যা আমরা অনুধাবন করতে সক্ষম নই, যাতে আমাদের কল্যাণ নেই, তা আমাদের কাছ থেকে গোপন রেখেছেন। তাই আমাদের উচিত আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করা।

তিনি আমাদের জানিয়েছেন কীভাবে এই বিশ্বজাহান সৃষ্টি হয়েছে। এ জ্ঞান তিনি দিয়েছেন তাঁর নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে। সুতরাং আসমান-যমীনের সৃষ্টি সংক্রান্ত যে কথাই আমরা শুনি না কেন, যাচাই করে দেখতে হবে তা নবী-রাসূলগণের কথার সাথে মিলে কি না। যদি মিলে, তাহলে তা গ্রহণ করব; যদি না মিলে তাহলে তা প্রত্যাখ্যান করব। আর যদি এ সম্পর্কে নবী-রাসূলগণের বক্তব্য জানতে না পারি, তাহলে যতদিন বিষয়টি সত্য না মিথ্যা তা নিশ্চিত হব, ততদিন এ ব্যাপারে নীরব থাকাই হবে স্বচ্ছ বুদ্ধির দাবি।

মুসল্লিয়ানে কিরাম! আল্লাহ তাআলা আমাদের জানিয়েছে যে, তিনি আসমান-যমীন ও এতদোভয়ের মাঝখানের সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির কাজ শুরু করে দুই দিনে তিনি যমীন সৃষ্টি করেছেন, তার উপর পেরেক স্বরূপ পাহাড়-পর্বত স্থাপন করেছেন। এরপর আর দুই দিনে তাতে খাদ্য সন্নিবেশিত করেছেন। এই হলো চারদিন। অতঃপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করেন। এটি তখন ছিল ধোঁয়ার মত। তারপর তিনি দুই দিনে সাত আসমান সৃষ্টি করেন। এই মোট ছয় দিনে আল্লাহ তাআলা আসমান-যমীন সৃষ্টি করেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ. 

‘ নিশ্চয় তোমাদের রব আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশে উঠেছেন। তিনি রাত দ্বারা দিনকে ঢেকে দেন। প্রত্যেকটি একে অপরকে দ্রুত অনুসরণ করে। আর (সৃষ্টি করেছেন) সূর্য, চাঁদ ও তারকারাজী, যা তাঁর নির্দেশে নিয়োজিত। জেনে রাখ, সৃষ্টি ও নির্দেশ তাঁরই। আল্লাহ মহান, যিনি সকল সৃষ্টির রব (সূরা আ‘রাফ : ৫৪)।

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন: إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مَا مِنْ شَفِيعٍ إِلَّا مِنْ بَعْدِ إِذْنِهِ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ.

‘ নিশ্চয় তোমাদের রব আল্লাহ। যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তারপর আরশে উঠেছেন। তিনি সব বিষয় পরিচালনা করেন। তার অনুমতি ছাড়া সুপারিশ করার কেউ নেই। তিনিই আল্লাহ, তোমাদের রব। সুতরাং তোমরা তাঁর ইবাদত কর। তারপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?’ (সূরা ইউনুস : ৩)।

মুহতারাম হাযেরীন! আসমান-যমীনের সৃষ্টির সাথে সাথে এতদোভয়ের মধ্যস্থিত সবকিছুই আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন। যমীন থেকে পানি ও চারণভূমি বের করেছেন এবং তাতে এমনভাবে খাদ্য লুকিয়ে রেখেছেন, যা সব যুগের এবং সব স্থানের উপযোগী। যাতে খাদ্যগুলো প্রত্যেক যুগে নানা রকমের হয়, সব সময় খাদ্য কোথাও না কোথাও থাকে এবং এই খাদ্যের প্রয়োজনে মানুষে মানুষে সম্পর্ক ও যোগাযোগ গড়ে ওঠে। তেমনিভাবে তিনি আসমানে চাঁদ-সূর্য ও তারকারাজি স্থাপন করে তাকে সুসজ্জিত করেছেন। এর দ্বারা মানুষ সমুদ্রে ও স্থলে পথ খুঁজে পায়।

আল্লাহ তাআলা বলেন : أَلَمْ تَرَوْا كَيْفَ خَلَقَ اللَّهُ سَبْعَ سَمَوَاتٍ طِبَاقًا . وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا. وَاللَّهُ أَنْبَتَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ نَبَاتًا.

‘ তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, কীভাবে আল্লাহ স্তরে স্তরে সপ্তাকাশ সৃষ্টি করেছেন ? আর এগুলোর মধ্যে চাঁদ সৃষ্টি করেছেন আলো এবং সূর্যকে সৃষ্টি করেছেন প্রদীপরূপে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে উদগত করেছেন মাটি থেকে’ ( সূরা নুহ : ১৫-১৭)।

শেষ কথা

আমরা যেন কিছুতেই এ কথা ভুলে না যাই যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এসব সৃষ্টিকে আমাদের অনুগত করে দিয়েছেন যাতে আমরা একমাত্র তাঁরই দাসত্ব করি; অন্য কাউকে তাঁর ইবাদাতে শরীক না করি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ ‘ আর জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার ইবাদত করবে’ (সূরা আয্যারিয়াত: ৫৬)।

তাই আমাদের সবার কর্তব্য, আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মতো তাঁর ইবাদত করা এবং এসব নিয়ামতের জন্য তাঁর শুকরিয়া আদায় করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَاشْكُرُوا لِلَّهِ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ 

 হে মুমিনগণ, আহার কর আমি তোমাদেরকে যে হালাল রিযক দিয়েছি তা থেকে এবং আল্লাহর জন্য শোকর কর, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত কর’ (সূরা বাকারা : ১৭২) ।

তিনি আরও ইরশাদ করেন: فَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا وَاشْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ

‘অতএব আল্লাহ তোমাদেরকে যে হালাল উত্তম রিযক দিয়েছেন, তোমরা তা থেকে আহার কর এবং আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় কর, যদি তোমরা তারই ইবাদত করে থাক’ (সূরা নাহাল : ১১৪)।

অন্যত্র তিনি ইরশাদ করেন: إِنَّمَا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَوْثَانًا وَتَخْلُقُونَ إِفْكًا إِنَّ الَّذِينَ تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ لَا يَمْلِكُونَ لَكُمْ رِزْقًا فَابْتَغُوا عِنْدَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ.

‘ তোমরা তো আল্লাহকে বাদ দিয়ে মূর্তিগুলোর পূজা করছ এবং মিথ্যা বানাচ্ছ। নিশ্চয় তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদের উপাসনা কর তারা তোমাদের জন্য রিযক-এর মালিক নয়। তাই আল্লাহর কাছে রিযক তালাশ কর, তাঁর ইবাদত কর এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে’ (সূরা আনকাবুত : ১৭)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাঁর নিয়ামত সম্পর্কে জানবার এবং বেশি বেশি তাঁর শুকরিয়া আদায় করার এবং ইবাদত করবার তাওফীক দান করুন। আমীন।

اَللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ وَبَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ وَارْضَ اللَّهُمَّ عَنِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ وَعَنْ آلِ نَبِيِّكَ الطَّيِّبِيْنَ الطَّاهِرِيْنَ وَعَنْ أَزْوَاجِهِ أُمُّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَعَنِ الصَّحَابَةِ أَجْمَعِيْنَ وَعَنِ التَّابِعِيْنَ وَمَنْ تَبِعَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَى يَوْمِ الدِّيْنِ وَعَنَّا مَعَهُمْ بِمَنِّكَ وَكَرَمِكَ وَعَفْوِكَ وَإِحْسَانِكَ يَا أَرْحَمَ الْرَّاحِمِيْنَ.

হে আল্লাহ! আপনার সকল নিদর্শন আমাদেরকে সঠিকভাবে অনুধাবনের তাওফীক দান করুন। হে আল্লাহ! আপনার সৃষ্টি সম্পর্কে সকল ভ্রান্ত আকীদা-বিশ্বাস থেকে আমাদেরকে হিফাযত করুন। আপনি আমাদের ঈমান ও আমলে দৃঢ়তা দান করুন।

হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে সকলপ্রকার আপদ-বিপদ, বালামুসীবত থেকে রক্ষা করুন। মুসলিম উম্মাহকে ইয্যতের সাথে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা ও আপনার দীনের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করার তাওফীক দান করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের সবাইকে হালাল রিযিক অন্বেষণের তাওফীক দান করুন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।

عِبَادَ اللهِ رَحمِكُمُ الله : (إِنَّ اللهَ يَأْمُرُ بِالْعَدْلِ والإحْسَانِ وَإيْتَاءِ ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالمْنْكَرِ وَالْبَغْيِ يَعِظُكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُوْنِ ) اُذْكُرُوا اللهَ يَذْكُرْكُمْ وَادْعُوْهُ يَسْتجِبْ لَكُمْ وَلَذِكْرُ اللهِ تَعَالَى أَعْلَى وَأَعْظَمُ وَأَكْبَرُ.

দারসুল কুরআন


ياَيُّهَا الَّذِيْنَ امَنُوْا اسْتَعِيْنُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلوةِ ج اِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ0
وَلاَ تَقُوْلُوْا لِمَنْ يُّقْتَلُ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ اَمْوَاتٌ ج بَلْ اَحْيَاءٌ وَّلكِنْ لاَ تَشْعُرُوْنَ 0
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوْعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الاَمْوَالِ وَالاَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ط وَبَشِّرِ الصَّابِرِيْنَ 0


ভাবানুবাদ

১৫৩. ‘ওহে তোমরা যারা ঈমান এনেছো, সবর ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবর অবলম্বনকারীদের সঙ্গে আছেন।
১৫৪. আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়, তাদেরকে তোমরা ‘মৃত’ বলো না। তারা তো আসলে জীবিত। কিন্তু তোমরা তা অনুধাবন করতে পার না।
১৫৫. এবং আমি অবশ্যই তোমাদেরকে ভীতিপ্রদ পরিস্থিতি, ধা-অনাহার এবং অর্থ-সম্পদ, জান ও আয়-উপার্জনের লোকসান ঘটিয়ে পরীা করবো। এমতাবস্থায় যারা সবর অবলম্বন করবে, তাদেরকে সুসংবাদ দাও।’

গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা ও সহজ সমাধান !

গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা ও সহজ সমাধান !

গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা আমাদের দেশে খুবই স্বাভাবিক ব্যপার। অনেককে বছরের প্রায় সময়ই ভূগতে হয় এ সমস্যায়। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর প্রতিকার হিসাবে পাওয়া যায় অনেক নামি দামি ওষুধ। কিন্তু আমাদের হাতের কাছের বিভিন্ন প্রকৃতিক জিনিস দিয়ে যদি করা যায় এর নিরাময়, তাহলে বাড়তি টাকা খরচ করার কি দরকার।
আসুন এরকম কিছু উপাদানের কথা জেনে নিই:

লং

যদি আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকেন, তবে লং হতে পারে আপনার সঠিক পথ্য। দুইটি লং মুখে নিয়ে চিবাতে থাকুন, যেন রসটা আপনার ভেতরে যায়। দেখবেন এসিডিটি দূর হয়ে গেছে।

জিরা

Thursday, October 16, 2014

নামাযের ফযীলতে ২৫টি সুসংবাদ

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুলল্লাহ ।

সম্মানিত বন্ধুরা, আজ আমরা জানব কুরআনও সহীহ হাদীসের আলোকে নামাযের ফযীলত সম্পর্কে ২৫টি সুসংবাদ।
বিষয়টি ইনশাআল্লাহ আমাদেরকে নামাযে আরও যত্নবান হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। তাহলে আসুন আমরা বিষয়টি একটু মনোযোগ সহকারে পড়ি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নামাযী হিসেবে কবুল করে সৌভাগ্যশালীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমীন।
ছালাত সর্বোত্তম আমল: রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করা হল কোন আমলটি সর্বোত্তম ? তিনি বললেন, সময়মত ছালাত আদায় করা। (মুসলিম)

ছালাত বান্দা এবং প্রভুর মাঝে সম্পর্কের মাধ্যম :

রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেউ যখন ছালাত আদায় করে, তখন সে তার পালনকর্তার সাথে গোপনে কথা বলে। (বুখারী)
ছালাত দ্বীনের মূল খুঁটি: রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সবকিছুর মূল হচ্ছে ইসলাম। তার (ইসলামের) মূল স্তম্ভ হচ্ছে ছালাত এবং তার (ইসলামের) সর্বোচ্চ চুড়া হচ্ছে জিহাদ। (তিরমিযী)
ছালাত হচ্ছে আলোকবর্তিকা: রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ছালাত হচ্ছে (কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য) নূর বা আলোকবর্তিকা। (মুসলিম, তিরমিযী)

কিয়ামতের প্রথম প্রশ্ন ছলাত: আপনি কি প্রস্তুত ?

আজকের পোস্টে ছয়টি বিষয় আলোচিত হয়েছে :

১) ছলাতের শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ। ২) ফযীলত বা মর্যাদা। ৩) ইসলামে নামাযের গুরুত্ব।  ৪) নামাযের বিধান।

৫) অসময়ে নামায আদায়ের ভয়াবহতা। ৬) নামাযের কয়েকটি উপকারিতা।

১) ছলাতের শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ:

ছলাত (الصلاة) শব্দের আভিধানিক অর্থ দুআ। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় ছালাত হল, নির্দিষ্ট কিছু কথা ও কাজের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করা, যা তাকবীর তথাআল্লাহু আকবা বলে শুরু করতে হয় এবং তাসলীম তথা আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ্বলে শেষ করতে হয়।

২) নামাযের ফযীলতঃ

আল্লাহ তাআলা বলেন:

ইসলামী সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং করণীয়

আমরা যদি এ কথা স্বীকার করে নিই যে, বাতিল সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সত্যিকার অর্থেই আমাদের জন্য বিপুল ক্ষতি বয়ে আনছে, সাংস্কৃতিক চর্চা না করার কারণে আমাদের জাতিসত্তা আজ প্রচণ্ড হুমকির সম্মুখীন, সমাজের বুকে ইসলামী পরিবেশ রচনায় ইসলামী সাংস্কৃতিক চর্চা একটি অপরিহার্য মাধ্যম। ইসলামের বিজয় সুনিশ্চিত করতে হলে ইসলামী সংস্কৃতির ব্যাপক বিকাশ প্রয়োজন। শক্তিশালী একটি ইসলামী সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে ঈমানের অপরিহার্য দাবি। এ দাবি পূরণ করতে হলে কেবল সাংস্কৃতিক চর্চা নয় বরং একটি সুপরিকল্পিত সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূচনা করা অত্যাবশ্যক। সাংস্কৃতিক চর্চা আর সাংস্কৃতিক আন্দোলন একই জিনিস নয়। আমাদের প্রয়োজন সংস্কৃতিক চর্চার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা। ইসলামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রতিটি মানুষ যেন নিজেকে ইসলামের রঙে রাঙিয়ে তোলার জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও অব্যাহত গতিতে প্রাণিত হয় তার জন্য যে প্রচেষ্টা তারই নাম ইসলামী সাংস্কৃতিক আন্দোলন। ইসলামী আন্দোলন যেমন জনগণকে ইসলামের দিকে প্রভাবিত করার মধ্যেই তার কাজকে সীমাবদ্ধ রাখে না, বরং সর্বস্তরে ইসলামের বিজয় চায়, তেমনি ইসলামী সাংস্কৃতিক আন্দোলনও কেবলমাত্র কিছুসংখ্যক সাংস্কৃতিক তৎপরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না।
ইসলামী সংস্কৃতির চর্চা করা প্রয়োজন এ কথা আমরা অনেকেই উপলব্ধি করি, কিন্তু কার্যত এর চর্চার জন্য পরিকল্পনা নিয়ে ময়দানে অবতীর্ণ হওয়ার অবকাশ আমাদের হয়ে ওঠে না। কিন্তু এ কথাতো সত্য, কর্মের ময়দানে নীরব অনুভূতির কোন দাম নেই- অনুভূতির বাস্তব বহিঃপ্রকাশই সেখানে মুখ্য বিষয়। তাই, আমরা যদি সত্যিই একটি সফল ইসলামী সাংস্কৃতিক বিপ্লব সৃষ্টি করতে চাই তবে ইসলামী দলগুলোর কেন্দ্র্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে উপশাখা পর্যন্ত সকল স্তরে সাংস্কৃতিক বিভাগ সৃষ্টি করতে হবে এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক নিয়োগ করতে হবে। অন্যান্য দায়িত্বের সাথে বাড়তি দায়িত্ব নয় বরং সাংস্কৃতিক বিভাগ দেখাশোনাই হবে সাংস্কৃতিক সম্পাদকের মূল দায়িত্ব। তিনি বার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে নিয়মিত তার দায়িত্ব আঞ্জাম দেবেন এবং রিপোর্ট পেশ করবেন।

আমি কি ছালাত আদায় করি ?

بسم الله الرحمن الرحيم

ছালাত ইসলামের দ্বিতীয় রুকন বা স্তম্ভ। পবিত্র কুরআনের প্রায় ৬৭টি স্থানে ছালাতের কথা বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়েছে। পূর্ববতী নবী-রাসূলদের সকলেই ছালাত আদায় করতেন। এমনকি আমাদের নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর উপর ছালাত ফরয হওয়ার আগেও তিনি দু‘রাকাত করে সকাল-সন্ধা ছালাত আদায় করতেন। কিন্তু উম্মতের উপর আমল হিসেবে আল্লাহ্‌ তা‘আলা সর্ব প্রথম যে ইবাদত ফরয করেন তা হচ্ছে ছালাত। ইসলামের প্রথম বাণী কালেমায়ে তাইয়্যেবা ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌’

এর পর প্রথম আদেশ ছিল ছালাতের। ছিল না যাকাত, ছিয়াম, হজ্জ বা কোন কিছুই।
 এ ছালাত জিবরীল (আ:)এর মারফত ওহীর মাধ্যমে যমীনে ফরয হয়নি; বরং তা সপ্তাকাশে আরশে আযীমে ফরয করা হয়েছে। আল্লাহ্‌ তা‘আলা তাঁর প্রিয় হাবীব শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) কে নিজের কাছে ডেকে নেন। হয় ঐতিহাসিক মে’রাজ। আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসূলের মাঝে সরাসরি কথোপকথোন হয়। আল্লাহ্‌ তা‘আলা রাসূলকে পঞ্চাশ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করার নির্দেশ দিয়ে প্রত্যার্পন করেন। কিন্তু ষষ্ঠাকাশে এসে মূসা (আ:)এর পরামর্শে তিনি ছালাতের সংখ্যা কমিয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে দরখাস্ত পেশ করেন। আল্লাহ্‌ তাঁর দরখাস্ত মুঞ্জর করে নির্ধারণ করেন পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত। কিন্তু বলে দিলেন, এই পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতে প্রদান করা হবে পঞ্চাশ ওয়াক্ত ছালাতের সমপরিমাণ ছওয়াব। (বুখারী ও মুসলিম থেকে সংক্ষেপে)

Wednesday, October 15, 2014

আপনি কিভাবে শয়তান থেকে বাঁচবেন-

আল্ হামদু লিল্লাহ্ ওয়াছ্ ছালাতু ওয়াস্ সালামু আলা রাসূলিল্লাহ্।

সম্মানিত পাঠক-পাঠিকা! আল্লাহ আপনাকে এবং আমাকে শয়তান থেকে রক্ষা করুন। শয়তান মানুষের প্রথম এবং শেষ শত্রু প্রকাশ্য শত্রু। তার কুমন্ত্রণা ও অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য মানুষ মাত্রেই প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু অস্ত্র যদি ধারালো না হয় বা সঠিকভাবে নিক্ষিপ্ত না হয় তবে শত্রু লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে। তাই শয়তান নামক শত্রু থেকে বাঁচার জন্য মহান ক্ষমতাধর আল্লাহ্ তা‘আলার এলাহী অস্ত্রই হচ্ছে সবচেয়ে বড় মাধ্যম।

মনে রাখবেন, এই শয়তান থেকে বাঁচতে হলে মনগড়া রক্ষা-কবচ ব্যবহার করলে হবে না। যেমন তাবীয-কবচ, সুতা, তাগা, রিং প্রভৃতি। কেননা এগুলো ব্যবহার করা শির্ক। যেমন রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি তাবীয ব্যবহার করবে সে শির্ক করবে।” (আহমাদ)

আমরা আপনাদের সামনে ইসলামে অনুমোদিত সেই সমস্ত মাধ্যম উল্লেখ করছি যা দ্বারা আপনি শয়তানকে বিতাড়িত ও পরাজিত করতে পারবেন। তার চক্রান্ত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।

ইসলামী অর্থনীতির রূপরেখা : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

ইসলামী অর্থনীতির রূপরেখা : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

এই প্রবন্ধটি গত ৭ই সেপ্টেম্বর ২০১২ শুক্রবার পারফেক্ট গ্রুপের নিজ অফিসে আয়োজিত ‘ইসলামী অর্থনীতির রূপরেখা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে পাঠ করা হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদাতের জন্য, আনুগত্যের জন্য। তিনি বলেন,

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ ﴿الذاريات: ٥٦

আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি। (৫১:৫৬)

ইবাদাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন সুস্থভাবে বেঁচে থাকা। আর সুস্থভাবে বাঁচার জন্য প্রয়োজন পৃথিবীতে বসবাসের নানা উপায়-উপকরণ। প্রয়োজন আবাসস্থল, খাবার, পোষাক ইত্যাদির। আর এগুলো সংগ্রহ করার জন্য প্রয়োজন অর্থ-সম্পদের। এই অর্থ-সম্পদ উৎপাদন, সরবরাহ, বিনিময়, বিতরণ ও ভোগ নিয়ে যে শাস্ত্র আলোচনা করে, তারই নাম ‘অর্থনীতি’।

সম্পদ সীমিত কিন্তু চাহিদা অফুরন্ত– এই মৌলিক পরিপ্রেক্ষিতে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা আধুনিক অর্থনীতির প্রধান উদ্দেশ্য৷ কিন্তু ইসলাম এর সাথে একমত নয়। ইসলাম মনে করে, একজন মানুষের অফুরন্ত চাহিদা তাকে স্বার্থপর করে তোলে। চাহিদা সীমিত করে সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করাই তাই ইসলামী অর্থনীতির মূল উদ্দেশ্য।

কলিকাতা ছাপা-ছহীহ নূরানী কোরআন শরীফ’ ! স্থানে স্থানে ভূল-কোরআন বাজেয়াপ্তের দাবী

মুহাম্মদ রুহুল আমীন নগরী :

ইসলাম ধর্ম হলো মহান আল্লাহর একমাত্র মনোনীত জীবন ব্যবস্থা বা ধর্ম। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হলেন হযরত মোহাম্মদ (সা)। আর ইসলাম ও মুসলমানদের প্রধানধর্মীয় গ্রন্থ হলো পবিত্র আলকোরআন। এই কোরআনে কোনরকম ভূল-ভ্রান্তী নেই। এমনকি এতে সন্ধেহের অবকাশ ও নেই, এই ঘোষণা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালার। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ আল কোরআনের মুদ্রণজনিত ভুল থাকা সত্তে ও হাজার হাজার কপি বিক্রয় করে সাধারণ ধর্মপ্রাণ লোকদেরকে বিভ্রান্ত করছে। সম্প্রতি সিলেটে মুদ্রণ জনিত ভূলে বহরপুর এমন কোরআনের কপি উদ্ধার করাহয়েছে। কুদরত উল্লাহ মার্কেটস্থ করিমিয়া লাইব্রেরী থেকে ক্রয়কৃত এবং নিউ এমদাদিয়া প্রকাশনী ৩৭,বাংলাবাজার,ঢাকা-১১০০ কর্তৃক পরিবেশিত ’ছহীহ নূরানী কোরআন শরীফ’এর মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ভূল ছাপা হয়েছে।

ইলমে গায়েব দাবী করা

প্রশ্নঃ যে ব্যক্তি ইলমে গায়েব দাবী করবে, তার হুকুম কি ?

উত্তরঃ- যে ব্যক্তি ইলমে গায়েব দাবী করবে সে কাফের। কেননা সে আল্লাহ তাআ’লাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস- করল। আল্লাহ তাআ’লা বলেন,

  قُلْ لَا يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ

“হে নবী আপনি বলে দিন! আকাশ এবং জমিনে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ গায়েবের সংবাদ জানে না এবং তারা জানে না যে, কখন পুনরুত্থিত হবে।” (সূরা নামলঃ ৬৫) 

যেহেতু আল্লাহ তাঁর নবীকে এই মর্মে ঘোষণা করার আদেশ দিয়েছেন, আকাশ-জমিনে আল্লাহ ছাড়া গায়েবের খবর আর কেউ জানে না, এরপরও যে ব্যক্তি গায়েবের খবর জানার দাবী করবে, সে আল্লাহকে এই ব্যাপারে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করল। যারা ইলমে গায়েবের দাবী করে, তাদেরকে আমরা বলব, তোমরা কিভাবে এটা দাবী কর অথচ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা জানতেন না। তোমরা বেশী মর্যাদাবান না রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ? যদি তারা বলে আমরা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বেশী মর্যাদাবান, তাহলে তারা এ কথার কারণে কাফের হয়ে যাবে। আর যদি বলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেশী মর্যাদাবান, তাহলে আমরা বলব কেন তিনি গায়েবের সংবাদ জানেন না ?  অথচ তোমরা তা জান বলে দাবী করছ ? 

সূর্য ঘুরে না পৃথিবী ?

প্রশ্নঃসূর্য কি পৃথিবীর চার দিকে ঘুরে ?

উত্তরঃ- মান্যবর শায়খ উত্তরে বলেন যে, শরীয়তের প্রকাশ্য দলীলগুলো প্রমাণ করে যে, সূর্যই পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘুরে। এই ঘুরার কারণেই পৃথিবীতে দিবা-রাত্রির আগমণ ঘটে। আমাদের হাতে এই দলীলগুলোর চেয়ে বেশী শক্তিশালী এমন কোন দলীল নাই, যার মাধ্যমে আমরা সূর্য ঘূরার দলীলগুলোকে ব্যাখ্যা করতে পারি। সূর্য ঘুরার দলীলগুলো হলঃ আল্লাহ তাআ’লা বলেন,

فَإِنَّ اللَّهَ يَأْتِي بِالشَّمْسِ مِنْ الْمَشْرِقِ فَأْتِ بِهَا مِنْ الْمَغْرِبِ


“আল্লাহ তাআ’লা সূর্যকে পূর্ব দিক থেকে উদিত করেন। তুমি পারলে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর।” (সূরা বাকারাঃ ২৫৮) সূর্য পূর্ব দিক থেকে উঠার মাধ্যমে প্রকাশ্য দলীল পাওয়া যায় যে, সূর্য পৃথিবীর উপর পরিভ্রমণ করে।
২) আল্লাহ বলেনঃ

কাফেরের জন্য কি ইসলাম গ্রহণ করা আবশ্যক ?

প্রশ্নঃ- কাফেরের জন্য কি ইসলাম গ্রহণ করা আবশ্যক ?

উত্তরঃ- প্রত্যেক কাফেরের উপরই ইসলাম গ্রহণ করা ওয়াজিব। চাই সে কাফের ইয়াহুদী হোক বা খৃষ্টান হোক। আল্লাহ তাআ’লা কুরআন মাজীদে এরশাদ করেন,

قُلْ يَاأَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ يُحْيِ وَيُمِيتُ فَآمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ الَّذِي يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَكَلِمَاتِهِ وَاتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمْ

“(হে নবী !) আপনি বলে দিন, হে মানবমন্ডলী! আমি আকাশ-জমিনের রাজত্বের মালিক আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের সবার নিকট প্রেরিত রাসূল। তিনি ব্যতীত সত্য কোন উপাস্য নাই। তিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তাঁর প্রেরিত নিরক্ষর নবীর উপর, যিনি বিশ্বাস রাখেন আল্লাহ এবং তাঁর সমস- কালামের উপর। তাঁর অনুসরণ কর যাতে সরল পথপ্রাপ্ত হতে পার।” (সূরা আরাফঃ ১৫৮)

Tuesday, October 14, 2014

মানুষ এবং জিন সৃষ্টির উদেশ্য কি

প্রশ্নঃ- মানুষ এবং জিন সৃষ্টির উদেশ্য কি ?

উত্তরঃ - উক্ত প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পূর্বে আল্লাহর সৃষ্টির সাধারণ নিয়ম এবং আল্লাহর শরীয়ত সম্পর্কে আলোচনা করতে চাই। আল্লাহর সৃষ্টির নিয়মটি বিধৃত হয়েছে আল্লাহর এই বাণী থেকে, وَهُوَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ অর্থঃ “তিনি সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়।” (সূরা তাহরীমঃ ২)

আল্লাহর বাণী, إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا অর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং প্রজ্ঞাময়।” (সূরা নিসাঃ ২৪)

এছাড়া আরো অসংখ্য দলীল-প্রমাণ রয়েছে।
এগুলো প্রমাণ করে যে, আল্লাহ যা সৃষ্টি করেন এবং যার আদেশ প্রদান করেন তাতে তিনি মহা কৌশলী। তিনি যাই সৃষ্টি করেন না কেন, তার পিছনে রয়েছে এক বিরাট উদ্দেশ্য। তিনি আমাদের জন্য যে শরীয়ত দিয়েছেন, তার ভিতরেও রয়েছে এক বিরাট হিকমত। চাই কোন বিষয় ওয়াজিব করার ভিতরে হোক কিংবা হারাম করার ভিতরে হোক। অথবা বৈধ করার মাঝেই হোক না কেন। এই হিকমত আমরা কখনো জানি আবার কখনো জানি না।
আল্লাহ প্রদত্ব জ্ঞানের মাধ্যমে কখনো কিছু লোকে জানে আবার অনেকে জানেই না। তাই আমরা বলব যে, আল্লাহ তাআ’লা জিন এবং মানুষকে এক বিরাট উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। তা হল একমাত্র আল্লাহর এবাদত করা। আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ অর্থঃ “আমি জ্বীন এবং মানুষকে আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।” (সূরা যারিয়াতঃ ৫৬)

আল্লাহ আরো বলেন, أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ অর্থঃ “তোমরা কি ধারণা করেছ যে, আমি তোমাদেরকে এমনিই সৃষ্টি করেছি? আর তোমরা আমার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে না?” (সূরা মুমিনূনঃ ১১৫)

আল্লাহ আরো বলেন, أَيَحْسَبُ الْإِنسَانُ أَنْ يُتْرَكَ سُدًى অর্থঃ “মানুষ কি ধারণা করে যে, তাদেরকে এমনিতেই ছেড়ে দেয়া হবে ?” (সূরা কিয়ামাহঃ ৩৬)

এছাড়া আরো অনেক আয়াত প্রমাণ করে যে, জিন-ইনসানের সৃষ্টিতে আল্লাহ তাআ’লার এক মহান উদ্দেশ্য রয়েছে। তা হল আল্লাহর এবাদত করা। ভালবাসা ও সম্মানের সাথে আল্লাহর আদেশ সমূহ বাস্তবায়ন করা এবং নিষেধ সমূহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হওয়ার নাম এবাদত।

আল্লাহ তাআ’লা বলেন, وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ অর্থঃ “তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে আল্লাহর এবাদত করবে।” (সূরা বাইয়িনাহঃ ৫) এই হল মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য।
সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর এবাদত করতে অহংকার করবে, সে ব্যক্তি এই হিকমত প্রত্যাখ্যানকারী হিসাবে গণ্য হবে। যার জন্য আল্লাহ তাআ’লা মানুষ সৃষ্টি করেছেন। সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা না করলে কি হবে তাদের কর্মসমূহ প্রমাণ বহন করে যে, আল্লাহ যেন তাদেরকে অযথা সৃষ্টি করেছেন।

সংগৃহীতঃ ফতোওয়া আরকানুল ইসলাম, ঈমান অধ্যায়।

কয়েকটি উপদেশ

(প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী থেকে)
পাঁটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিস আসার আগে গনীমতের অমূল্য সম্পদ হিসেবে গ্রহণ কর :

১) জীবনকে মৃত্যু আসার আগে।
২) সুস্থতাকে অসুস্থ হওয়ার আগে।
৩) অবসর সময়কে ব্যস্ততা আসার আগে।
৪) যৌবনকে বার্ধক্য আসার আগে এবং
৫) স্বচ্ছলাতাকে দারিদ্রতা আসার আগে।

মুসান্নাফ ইবন আবী শায়বা ৮ম খন্ড, ৮ম অধ্যায় ১২৭ পৃষ্ঠা। আল্লামা আলবানী রাহ, হাদীসটি সহীহ বলেছেন। দ্রঃ সহীহুল জামে, হাদীস নং ১০৭৭

ইসলাম কী শেখায় ?

প্রতারণা ও ধোকাবাজী করা হারামঃ রাসূল সা বলেছেনঃ مَنْ غَشّنا فَلَيْسَ مِنِّا ‘যে আমাদের সাথে প্রতারণা করে তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।’ (মুসলিম)

প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া হারাম: রাসূল সা বলেছেনঃ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يُؤْذِ جَارَهُ ‘যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ (বুখারী)

অতিথী সেবা: রাসূল সা বলেছেনঃ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ ‘যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।’ (বুখারী)

ভাল কথা বলতে হবে নতুবা চুপ থাকতে হবে: مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ ‘যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ভাল কথা বলে নতুবা চুপ থাকে।’ (বুখারী)

মুমিন এবং মুশরিকদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুরা মারা গেলে তাদের পরিণতি কী হবে ?


প্রশ্নঃ- মুমিনদের শিশু বাচ্চাদের পরিণাম কি ? মুশরিকদের যে সমস্ত শিশু প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পূর্বে মৃত্যু বরণ করে, তাদের অবস্থা কি হবে ?

উত্তরঃ- মুমিনদের শিশু সন্তাগণ তাদের পিতাদের অনুসরণ করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহ বলেন,

وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُمْ بِإِيمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَا أَلَتْنَاهُمْ مِنْ عَمَلِهِمْ مِنْ شَيْءٍ كُلُّ امْرِئٍ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ

অর্থঃ “যারা ঈমানদার এবং তাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কর্মের জন্য দায়ী হবে।” (সূরা তূরঃ ২১)

অমুসলিমদের নাবালক শিশুদের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ কথা হল, আমরা বলব আল্লাহই ভাল জানেন তারা কি আমল করত। দুনিয়াতে তারা তাদের পিতা - মাতাদের অন্তর্ভূক্ত হবে। আর আখেরাতে তাদের অবস্থা কি হবে আল্লাহই ভাল জানেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ কথাই বর্ণিত হয়েছে। ( বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল জানায়েয।)

পরকালে তাদের কি হবে সেটা জানার ভিতরে আমাদের কোন লাভ নেই। দুনিয়াতে তাদের বিধান হল, তারা প্রাপ্ত বয়স্ক মুশরিকদের মতই হবে। মারা গেলে তাদেরকে গোসল দেয়া হবে না, কাফন পরানো হবে না, তাদের উপর জানাযার নামায পড়া হবে না এবং মুসলমানদের গোরস্থানে দাফন করা হবে না।

ফতোওয়া আরকানুল ইসলাম, ঈমান অধ্যায়।

কুরআন মাজীদ পড়ার কতিপয় আদব

কুরআন মাজীদ পড়ার কতিপয় আদব

১. আল্লাহ উদ্দেশ্যে ইবাদাত মনে করে পড়া
২. মন স্থির করা এ লক্ষে যে আমি আল্লাহ তা’য়ার সাথে কথোপকতন করছি
৩. আয়াত পাঠের সময় তাঁকে সম্মান দেখানো এবং তাঁর মহত্ব বোঝা
৪. বিনয়-নম্রতা এবং আয়াতের অর্থ বোঝার চেষ্টা নিয়ে পাঠ করা
৫. পবিত্র অবস্থায় পাঠ করা
৬. পবিত্র স্থানে পাঠ করা
৭. পাঠের পূর্বে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় কামনা করা
৮. সম্ভবে কিবলা মূখী হওয়া
৯. সুন্দর সূরে পাঠ করা
১০. হাসি বা রসিকতা নিয়ে না পড়া

Saturday, October 11, 2014

আবার ১৩ দফা সামনে আনবে হেফাজত

ফয়েজ উল্লাহ ভূঁইয়া : সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের নীতি পুনঃস্থাপন, ধর্ম অবমাননার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে আইন পাসসহ ১৩ দফা দাবি নতুন করে সামনে আনার ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন হেফাজত নেতারা। এ নিয়ে হজ পালনরত হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী সৌদি আরব থেকে ফোনে শীর্ষ কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলেছেন। বিশেষ করে হজ ও মহানবী সা: সম্পর্কে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর কটূক্তির খবর জেনে আল্লামা শফী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়ে সংগঠনের নেতাদের আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে হেফাজত বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি হাতে নেয়। দেশে ফেরার পর আল্লামা শফী সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের সাথে বৈঠক করতে পারেন বলেও জানা গেছে।

ছবি



ঈমানের দুর্বল লক্ষণ সমূহ

মুহাম্মদ হামিদুল ইসলাম আজাদ
আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন, আমাদের ঈমান কখন বাড়ে আবার কখন কমে । এ সম্পর্কে রাসূল (সা) বলেন, “আমাদের প্রত্যেকের ঈমান ক্রমশ জীর্ণ হতে থাকে যেভাবে “সাউব” (এক ধরনের পোশাক) জীর্ণ হয়ে যায় (পোশাক ক্রমশ পরিধান করতে থাকলে যেমন একটা সময় জীর্ণ -শীর্ণ হয়ে যায়, আমাদের ঈমানও ঠিক তেমনি করে জীর্ণ হয়ে যায়) ।” আর তাই প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর উপদেশ হল, (যেহেতু আমাদের ঈমান জীর্ণ হয়ে যায়) “অতএব, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত হৃদয়ে ঈমানের নবায়নের জন্য আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের কাছে দোয়া করা” ।
[হাদীসটি আল - হাকিম তার “আল-মুসতাদ্‌রাক” গ্রন্থে, আল - হায়সামি তার “মাজ‘মা আল - যা‘ঈদ” গ্রন্থে, আল - তাবারানি তার “আল-কাবীর” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন ।]
আত্ম - সচেতনতার জন্য দুর্বল ঈমানের লক্ষণগুলো ভালোভাবে জেনে রাখা আবশ্যক ; দুর্বল ঈমানের কিছু লক্ষণ হল :

হাদীস সংকলনের ইতিহাস ও হাদীসের কথা

হাদীস সংকলনের ইতিহাস  ও হাদীসের কথা আজ আপনাদের সামনে হাদিসের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বই নিয়ে হাজির হয়েছি। একটি হল হাদীস সংকলনের ইতিহাস এবং অন্যটি ...